বন্দরে আমদানি করা গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করে পালানোর সময় আটক ৩ 

মোংলা বন্দরে আমদানি হওয়া রিকন্ডিশন্ড গাড়ির মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি করে নেওয়ার সময় তিন জনকে আটক করা হয়েছে। সোমবার (২৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টায় বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা বিভাগের সদস্যরা তাদের আটক করেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তা বিভাগের এসআই মো. আরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে মোংলা থানায় মামলা করেছেন।

আটক ব্যক্তিরা হলেন—পিরোজপুর সদরের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে মো. রাজু (৩০), বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার সুলতান আহমেদের ছেলে মো. জসিম উদ্দিন ও খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার হুমায়ূন কবিরের ছেলে ফাহিম শেখ (২৫)।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা (সিএসও) লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদি বলেন, ‘একটি চক্র এ বন্দরের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে এসব অপকর্ম করে আসছে। চক্রের সদস্যরাই সোমবার রাতে গাড়ির ড্রাইভার ও শ্রমিক সেজে জেটির ভেতরে ঢুকে পড়ে। পরে তারা বন্দরে আমদানি হওয়া রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্রাংশ খুলে পিকআপে উঠিয়ে বের করার সময় নিরাপত্তাকর্মীর হাতে ধরা পড়ে।’

এ সময় তাদের হাতে আটক হওয়া খুলনা মেট্রো- ন ১১-০৭০৭ নম্বরের পিকআপটি থেকে চারটি নেভিগেশনাল সফটওয়্যার এসডি কার্ড, দুটি রিমোট চাবি, চারটি চার্জার, একটি চার্জার ক্যাবল, তিনটি পেনড্রাইভ, একটি সিগন্যাল লাইট, একটি ক্যামেরা, ১৪টি কার্টার ব্লেড ও একটি ছাতা জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) মোংলা থানায় মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মেহেদি। 

তিনি আরও বলেন, ‘বন্দর কর্তৃপক্ষের কঠোর নিরাপত্তার কারণে চুরিসহ সব প্রকারের অপকর্ম কমে আসায় গাড়ি আমদানিতে এই বন্দর রেকর্ড গড়েছে।’ এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে, বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকেলস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারবিডার) লিয়াজোঁ কর্মকর্তা শেখ আবেদুর মবিন জানান, সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের থেকে মোংলা বন্দর এগিয়ে থাকায় এই বন্দর ব্যবহার করছেন তারা। কিন্তু আমদানি হওয়া রিকন্ডিশন্ড গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হওয়ার ঘটনা তাদের হতবাক করেছে। এই চোরাই সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এসব অপকর্ম করে আসছে।’ দ্রুত এসব বন্ধ করা না গেল তারা মোংলা বন্দর ব্যবহারে উৎসাহ হারাবেন বলে জানান তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমদানি হওয়া রিকন্ডিশন্ড গাড়ি খালাসের সময় তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকলে এই চুরির ঘটনা আর ঘটবে না। বন্দরের কঠোর নিরাপত্তার কারণে ৮০ শতাংশ চুরি হ্রাস পেয়েছে। বাকি ২০ শতাংশ চুরি ঠেকানো গেলে গাড়ি আমদানি আরও বাড়বে।’

মোংলা থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির দায়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ তিন জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে আজই জেলে পাঠানো হবে।’