একটি ঘর চাইলেন সাফজয়ী মাসুরার বাবা

সাফ জয়ের পর প্রথমবারের মতো সাতক্ষীরায় শ্যামনগরের বাড়িরে এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবল দলের অন্যতম ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ভোরে তিনি নিজ বাড়িতে ফেরেন। বিকালে তিনি শ্যামনগরে ফুটবল খেলতে যান। সেখানে তাকে সংবর্ধনা দেওয়া দেওয়া হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে বিনেরপোতায় মাসুরা পারভীনের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মাসুরা তার মা ফাতেমা খাতুনের সঙ্গে বসে গল্প করছেন। পাশেই ছিল তার মেজ বোন।

মা ফাতেমা খাতুন বলেন, আমরা গরিব মানুষ। ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে আমি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেছিলাম। অনেকেই অনেক কথা বলতেন। মেয়ে হয়ে কেন ফুটবল খেলবে? তবে সব বাধা অতিক্রম করে তাকে খেলা চালিয়ে যেতে উৎসাহ দিতাম।

তিনি আরও জানান, মেজ মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে বলে আমি মাঝে মাঝে তাকে বিয়ের কথা বলি। তবে বিয়েতে সে সায় দেয় না। ফুটবলই ওর ধ্যান-জ্ঞান।

মাসুরার স্থানীয় কোচ মরহুম আকবর আলীর স্ত্রী রেহেনা খাতুন বলেন, পিটিআই মাঠে সাবিনাসহ অন্যান্য খেলোয়াড়রা ফুটবল খেলতো। সে সময় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মাসুরা ওই মাঠে বসে খেলা দেখতো। মাঝে মাঝে বল মাঠের বাইরে গেলে মাসুরা তা কুড়িয়ে আনতো। ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখে আমার স্বামী আকবার আলী তাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে নিয়ে যান। সেই থেকে মাসুরা আমার স্বামীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে খেলতে খেলতে আজ এই পর্যন্ত এসেছে।

মাসুরার বাবা রজব আলীর নিজস্ব জায়গা-জমি নেই। থাকেন বিনেরপোতায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায়।
রজব আলী বলেন, অসুস্থতার জন্য এখন কাজ করতে পারি না। সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় থাকি। সরকারিভাবে একটি ঘর পেলে খুবই উপকৃত হতাম।

মাসুরা বলেন, সাতক্ষীরার মানুষের ভালোবাসা পেয়ে উচ্ছ্বসিত আমি। সাফ জয়ের পরে ফুটবলকে নিয়ে উন্মাদনার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানাই।

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন কবির জানান, আগামী রবিবার জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাসুরা পারভীনকে সংবর্ধনা দেওয়া হবে। আর সুবিধাজনক সময়ে জেলা ক্রীড়া সংস্থার পক্ষ থেকে সাবিনা খাতুন ও মাসুরাকে একসঙ্গে সংবর্ধনা দেওয়া হবে।