উঠে গেছে সড়কের পিচ, ৪ বছরেও হয়নি সংস্কার

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগলেও অবহেলায় পড়ে আছে আরাজি সাজিয়াড়া-গুটুদিয়া সড়কটি। গত চার বছর ধরে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার কাজ না হওয়ায় তা এখন মানুষের চরম দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। 

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাজিয়াড়া মাদ্রাসা সড়ক নামে পরিচিত ‘আরাজি সাজিয়াড়া-গুটুদিয়া’ সড়কটি ডুমুরিয়া প্রশাসন ও থানার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম প্রধান পথ। উপজেলা প্রশাসন বেশ আগে ওই সড়কটি পিচ দিয়ে পাকা করে। কিন্তু সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কটি পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে যায়। সড়কের বিভিন্ন অংশে সৃষ্টি হয় গর্ত। দীর্ঘদিন সংস্কার কাজ না হওয়ায় তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠে। 

স্থানীয়রা আরও জানান, খুলনা-সাতক্ষীরা সড়কে ডুমুরিয়া বাসস্ট্যান্ড মোড় (আরাজি সাজিয়াড়া) থেকে ডুমুরিয়া যুব সংঘ ফুটবল মাঠের উত্তরপাশ পর্যন্ত তিনশ’ মিটার সড়কের দুই পাশে পানি সরার ব্যবস্থা নেই। ফলে এ অংশে খুব দ্রুতই পিচ উঠে ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়। ২০১৯ সালে ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ওই স্থানে ড্রেন নির্মাণের জন্য মাটি খনন করান। কিন্তু সেখানে এখনও কোনও ড্রেন হয়নি। বরং খননের আগে রাস্তা যেটুকু ছিলও, ইতোমধ্যে তাও ভেঙে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। 

সাবেক ইউপি মেম্বার সরদার জাহাঙ্গীর কবির বলেন, ২০১৯ সালে চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলু ওই রাস্তার বিশ্বাস বাড়ি মোড় থেকে ফুটবল খেলার মাঠ পর্যন্ত ড্রেন করার জন্য মাটি খনন করান। কিন্তু আজও ড্রেন তৈরি হয়নি। এ কারণে পিচের রাস্তা ভাঙতে ভাঙতে ড্রেনের সঙ্গে একাকার হয়ে গেছে।

ওই সড়কে চলাচলকারী ব্যবসায়ী সঞ্জয় রায় বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই সড়ক দিয়ে চলাচল অসম্ভব হয়ে ওঠে। 

সড়কের পাশের মডেল সরকারি পাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শফিকুল আলম বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই সড়কের পানি জমে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা ইউনিফর্ম পরে স্কুলে আসতে পারে না। তাছাড়া যানবাহন চলাচলের ক্ষেত্রেও বিপজ্জনক অবস্থার সৃষ্টি হয়।

সাজিয়াড়া মাদ্রাসার সিনিয়র মোহাদ্দিস আবদুর রহমান বলেন, ডুমুরিয়া ভ্যানস্ট্যান্ড মোড় থেকে শুরু করে মডেল স্কুল হয়ে পালপাড়ার মোড় ও মাদ্রাসা পর্যন্ত পানি নামার কোনও ব্যবস্থা নেই। এতে  পানি জমে সড়কে গর্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শিক্ষার্থীসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচলকারীদের মারাত্মক সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।

ডুমুরিয়া সদরের ইউপি চেয়ারম্যান গাজী হুমায়ুন কবির বুলু বলেন, সংসদ সদস্যের পরামর্শে ওই সড়কের পানি সরাতে ড্রেন তৈরির জন্য মাটি খনন করিয়েছিলাম। কিন্তু পরে টাকার জোগান পাইনি। আমাদের আশা ছিল, সড়কের জন্য সংসদ সদস্য এইটুকু কাজ করবেন। আর ওখানে ঢালাই রাস্তা ছাড়া কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু আমাদের পরিষদের ওতো বরাদ্দ নেই।

ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম বলেন, সড়কটির জন্য আমার দফতর থেকে প্রাক্কলন তৈরি করে গত ২২ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের কাছে এক কোটি ৩৬ লাখ টাকার বরাদ্দ চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।

সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ডুমুরিয়া-ফুলতলা থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য নারায়ণ চন্দ্র চন্দ বলেন, প্রকৌশল অধিদফতরের ফান্ডের জন্য চেষ্টা চলছে। আর ওই সড়কটি আরও মজবুত ও প্রশস্ত করে বানানোর পরিকল্পনা রয়েছে। আর পানি নিষ্কাশনের জন্য এবার একটা ফান্ডও পাওয়া গেছে। আশা করছি, খুব তাড়াতাড়ি একটা ব্যবস্থা করা যাবে।