এক দশকে বদলে গেছে যশোরের গ্রামীণ অবকাঠামো, উন্নত জীবনযাত্রা

গত এক দশকে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জীবিকা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা, তথা মানবসম্পদ উন্নয়নসহ যশোরের গ্রামীণ অবকাঠামোর আমূল পরিবর্তন হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) টেকসই অবকাঠামো উন্নয়ন জেলার সব মহলেই এখন প্রশংসিত।

এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, পল্লী সড়কসহ অন্যান্য উন্নয়ন বর্তমান সরকারের একটি অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে এলজিইডি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এরই মধ্যে গত ১০ বছরে জেলার প্রায় ৪ হাজার ২০ কিলোমিটার বিভিন্ন সড়ক নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। ২ হাজার ২৫০ মিটার ব্রিজ নির্মাণসহ রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়েছে। সামাজিক বনায়ন করা হয়েছে প্রায় ২৭ কিলোমিটার। এছাড়া ২০টি গ্রামীণ বাজারের অবকাঠামো উন্নয়নসহ নির্মাণ করা হয়েছে। 

অন্যদিকে প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪৬টি অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি নির্মাণ করেছে এলজিইডি। একই সঙ্গে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। জেলার কেশবপুর উপজেলায় ১.২০ কোটি টাকা ব্যয়ে কৃষক সার্ভিস সেন্টার নির্মাণ করেছে যশোর এলজিইডি। এছাড়া ১১.১১ কোটি টাকা ব্যয়ে ২১০টি মসজিদ, মন্দির, ঈদগাহ ও শ্মশান নির্মাণ করেছে তারা। আইআরআইডিপি, আইআরআইডিপি-২, আইআরআইডিপি-৩, জিজেকেপি, জিজেআইডিপি, জিওবি মেইন্টেন্যান্স, বিএআইডিপি, এসআরআইআইপি, আরবিসিটিআরএইচডি, ডিআইআরআইপি, সিআরডিপি, এলবিসি, এফএসসিটিটি, সিএইচএলইউএমপি, ইউএমসি, জিএসআইডিপি, ভিআরআরপি, কেডিআরআইডিপি, জেআরআরআইডিপি প্রকল্পে এসব উন্নয়ন কর্ম সম্পন্ন হয়েছে।

ভৈরব-সেতু

এলজিইডির দফতর সূত্রে জানা গেছে, টেকসই গ্রামীণ সড়ক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাস্তবায়িত এসব সড়ক সারা বছরের জন্য চলাচলের উপযোগী করে রাখতে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ করে যাচ্ছে যশোর এলজিইডি। ফলে চাঙা থাকে গ্রামীণ অর্থনীতি ও সামাজিক সব কর্মকাণ্ড, কমে যায় যানবাহন পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, সাশ্রয় হয় অর্থের, আর মানুষ পায় নিরাপদ ও শান্তিময় পথ চলার আনন্দ। নদনদী ও খালের ওপর ব্রিজ-কালভার্ট নির্মাণ করে যশোর এলজিইডি জনজীবনে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। সৃষ্টি করছে অবাধ ও নিরবচ্ছিন্ন সড়ক নেটওয়ার্ক। বৃক্ষরোপণ করাসহ নারীদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরির কাজেও এলজিইডি নতুন নতুন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

যশোর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম আনিছুজ্জামন জানান, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে এরই মধ্যে গ্রামের চেহারা পাল্টে গেছে। আরও অনেক প্রকল্প চলমান রয়েছে। গত ১০ বছরে যশোর এলজিইডি গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। টেকসই ও সময়োপযোগী প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতি, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জীবিকা ও উন্নত জীবন ব্যবস্থা, তথা মানবসম্পদ উন্নয়নে এ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে।