নৃশংস হত্যার দায়ে চরমপন্থি দলের দুজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

কুষ্টিয়ায় ফিরোজ মোল্লা নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে দুই চরমপন্থি নেতার মৃত্যুদণ্ড ও চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদের আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার মৃত্তিকাপাড়া গ্রামের আদিল উদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে সজিব বিশ্বাস ও একই উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জানে আলীর ছেলে রফিকুল ইসলাম। যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার করিমপুর গ্রামের মৃত ওয়াহেদ জোয়াদ্দারের ছেলে জমির উদ্দিন জোয়াদ্দার, একই থানার বালিয়াপাড়া গ্রামের মৃত মকছেদ আলী মন্ডলের ছেলে সদর উদ্দীন মন্ডল, আব্দুল আজিজের ছেলে আনিছুর রহমান ও দিদার আলীর ছেলে সুমন আলী। রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জমির উদ্দিন জোয়াদ্দার ছাড়া অন্য আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালের ২ জানুয়ারি সকালে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার আলামপুর ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গেটের সামনে থেকে ফিরোজ মোল্লার দেহহীন রক্তাক্ত মাথা উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডার বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আসামিরা পরিকল্পিতভাবে ফিরোজ মোল্লাকে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর তার মাথা বাজারের ব্যাগে করে স্কুলের গেটে ঝুলিয়ে রাখে আসামিরা। পরে বালিয়াপাড়ার বাবলাতলা মাঠ থেকে মাথাবিহীন দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কুষ্টিয়া মডেল থানার তৎকালীন এসআই সঞ্জয় কুমার কুন্ডু বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ১ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র দেন। আদালত এই মামলায় সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা করেন।

কুষ্টিয়া আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী বলেন, টেন্ডার নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ফিরোজ মোল্লাকে গলা কেটে মাথা বিচ্ছিন্ন করে হত্যার দায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড ও চার জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা চরমপন্থি দলের নেতা ও সদস্য। তারা চাঁদাবাজি, অপহরণ, খুন, নিয়োগ বাণিজ্য, টেন্ডারবাজিসহ নানা সন্ত্রাসী অপকর্মে জড়িত ছিল।