দুই ঠিকানায় যাচ্ছে মা ও তার যমজ সন্তান

যশোর জেনারেল হাসপাতালে ১৮ দিন রাখার পর মাহিনুর বেগমকে (৩০) পাঠানো হলো ভবঘুরে কেন্দ্রে। আর ১৮ দিন বয়সী তার যমজ সন্তান মুসা ও মায়শাকে ছোটমণি নিবাসে।

যশোরের বাঘারপাড়ার একটি গ্রামের রাস্তায় জন্ম নেওয়া যমজ সন্তান ও তাদের মানসিক ভারসাম্যহীন মাকে আনুষ্ঠানিকভাবে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে বিদায় জানানো হয়েছে।

এ সময় হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিত কুমার রায় ও হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর রশিদ। একটি অ্যাম্বুলেন্সে মাহিনুর বেগম গেলেন গাজীপুরের ভবঘুরে সেন্টারে আরেকটিতে দুই শিশু খুলনার ছোটমণি নিবাসে।

রণজিত কুমার রায় বলেন, ‘হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে এই যমজ শিশু ও তাদের ভারসাম্যহীন মায়ের ব্যাপারে জানতে পারি। দুটি শিশু ও মায়ের চিকিৎসাসেবায় যশোর জেনারেল হাসপাতাল একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এমন শিশুদের জন্য খুলনায় একটি ছোটমণি নিবাস আছে। সেখানেই এই নবজাতক যমজকে পাঠানো হচ্ছে এবং মানসিক রোগী মাকে গাজীপুরে সরকারি ভবঘুরে সেন্টারে।’

যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন-অর রশিদ বলেন, ‘যমজ সন্তান এবং মাকে যখন এ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়, তখন তাদের মায়ের অবস্থা খুব খারাপ ছিল। আমরা তখন রক্তের ব্যবস্থা করে রক্ত দিই। মা ও শিশুকে সুস্থ করে তুলি। এরপর আমাদের একটি পরিকল্পনা ছিল যে, যত দিন এই মা ও শিশুদের দায়িত্ব রাষ্ট্র না নেবে তত দিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের দেখাশোনা করবে। আজ আমরা এ দুটি শিশু ও মাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানিয়েছি।’

তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, ‘এই শিশুরা একদিন বড় হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করবে।’

গত ৩ সেপ্টেম্বর বাঘারপাড়া উপজেলার শ্রীপুর নতুন গ্রামে রাস্তায় যমজ সন্তান প্রসব করেন মানসিক ভারসাম্যহীন এক প্রসূতি। ওই মায়ের কাছে সন্তানদের বাবার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি একেক সময়ে একেক ব্যক্তির নাম বলছিলেন। সন্তান প্রসবের পর ওই মা ও নবজাতকদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাদের দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন আনসার সদস্য, সমাজসেবা দফতর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।