সোনা চোরাচালান মামলায় ৩ জনের ফাঁসি, দুই জনের যাবজ্জীবন

যশোরের শার্শা সীমান্ত থেকে ৭২ কেজি সোনা উদ্ধারের মামলায় তিন জনের মৃত্যুদণ্ড, দুই ভারতীয় নাগরিকের যাবজ্জীবন ও অপর ৪ আসামিকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) দুপুর ২টায় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম এ রায় দেন। রায় প্রদানকালে দণ্ডিতদের মধ্যে ৬ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল।

সরকার পক্ষের আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো মহিউদ্দিন তরফদার শান্তি, জাহিদুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমান। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলো ভারতীয় নাগরিক মাসুদ রানা ও শফিকুল মন্ডল। ২০ বছরের সাজাপ্রাপ্তরা হলো সাফি, ইমরান হোসেন, কবির হোসেন ও রুবেল হোসেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৯ আগস্ট রাতে যশোরের শার্শার শিকারপুর বিজিবি ক্যাম্পের সদস্য হাবিলদার মুকুল হোসেন নিয়মিত টহলের সময় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন একদল চোরাকারবারি পাচারের উদ্দেশে সোনা নিয়ে ভারতে যাবে। এরপর তারা নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের সীমান্ত পিলারের পাশে অবস্থান নেন। রাত ১০টার দিকে কয়েকজন লোক নারিকেলবাড়িয়া মাঠের মধ্য দিয়ে ভারতের দিকে যাওয়ার সময় তাদের চ্যালেঞ্জ করে বিজিবি। এ সময় মহিউদ্দিন নামে একজনকে আটক করলে দুজন ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায়। মহিউদ্দিনের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে ২২৪টি সোনার বার ও ফেলে যাওয়া দুটি ব্যাগ থেকে ৪০০টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়। যার ওজন ৭২ কেজি সাড়ে চারশ গ্রাম।

পরদিন শিকারপুর বিওপির বিজিবির হাবিলদার মুকুল হোসেন বাদী হয়ে তিন জনের নাম উল্লেখসহ অপরিচিত ব্যক্তিদের আসামি করে চোরাচালান দমন আইনে শার্শা থানায় মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ পরে সিআইডি পুলিশ তদন্তের দায়িত্ব পায়। এ মামলার তদন্তকালে আটক আসামিদের দেওয়া তথ্য ও সাক্ষীদের বক্তব্যে সোনা চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকায় ওই ৯ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

দীর্ঘ বিচার প্রক্রিয়া শেষে আজ এ মামলায় মহিউদ্দিন তরফদার শান্তি, জাহিদুল ইসলাম ও মুজিবুর রহমানকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, ভারতীয় নাগরিক মাসুদ রানা ও শফিকুল মন্ডলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড এবং সাফি, ইমরান হোসেন, কবির হোসেন ও রুবেল হোসেনকে ২০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।