সকালে স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া, রাতে লাশ হলেন হাফিজা

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে হাফিজা খাতুন (৩৮) নামের এক নারীকে গলা কেটে হত্যা করে করেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিকট মা নার্সিং হোম অ্যান্ড ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত হাফিজা খাতুন একই ক্লিনিকের নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং তিনি উপজেলার বালিহুদা গ্রামের কবির হোসেনের স্ত্রী।

স্বজন ও সহকর্মীরা জানায়, হাফিজা উপজেলার উথলী ইউনিয়নের সন্তোষপুর গ্রামের সমশের আলীর মেয়ে। তার প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর মা নার্সিং হোম অ্যান্ড ক্লিনিকে নার্সের কাজ শুরু করেন। প্রথম পক্ষের দুটি সন্তান আছে। হাফিজা ক্লিনিকেই থাকতেন। পরবর্তী সময়ে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা গ্রামে কবির হোসেনকে। হাফিজার দ্বিতীয় স্বামী মাঝে মাঝে ক্লিনিকে আসা-যাওয়া করে। গত কিছুদিন ধরে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ও ঝগড়াঝাঁটি চলছিল। ঘটনার দিন সকালে ক্লিনিকের ছাদে বাগবিতণ্ডা, চিৎকার-চেঁচামেচি শোনা যায়। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ক্লিনিকে অন্য স্টাফদের হাঁকডাকে এসে দেখা যায় হাফিজার গলাকাটা লাশ পড়ে আছে।

ক্লিনিকের এক সহকর্মী জানান, রাতে কাজ শেষ করে ক্লিনিকের দ্বিতীয় তলায় হাফিজার সঙ্গে আলাপচারিতার পর তৃতীয় তলায় যান তিনি। এর কিছুক্ষণ পর দ্বিতীয় তলায় এসে হাফিজাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেন। কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে জানা নেই। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

তিনি আরও বলেন, ‘সকালে নিহতের স্বামী এই ক্লিনিকে এসেছিলেন। হাফিজার সঙ্গে কোনও কারণে বাগবিতণ্ডা হয়। এরপরই তিনি সেখান থেকে চলে যান।’

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রাগবির হাসান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) নাজিম উদ্দিন আল আজাদ (পিপিএম-সেবা), সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশের কর্মকর্তারা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দিন আল আজাদ বলেন, ‘কী কারণে হত্যার ঘটনা ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে ওই নারীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং পেশাগত অবস্থানসহ বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে রেখে পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে। আশা করছি, দ্রুতই এ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হবে এবং প্রকৃত অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা হবে।’