দোকানে চুরির পর গ্রামের ৩টি টিউবওয়েলে বিষ, আতঙ্কে স্থানীয়রা

যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বোধখানা গ্রামের একটি হাইস্কুল, একটি হোটেল ও একটি বাড়ির টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগ করেছে দুর্বৃত্তরা। গ্রামবাসীকে ‘হত্যার’ উদ্দেশ্যে বিষ ঢেলে রাখা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন গ্রামের বাসিন্দারা। তবে কেউ পানি পান না করায় বড় ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। এ নিয়ে গ্রামে পানি পান নিয়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। যে কারণে টিউবওয়েলগুলোতে লাল কাপড় বেঁধে রাখা হয়েছে।

অবশ্য পুলিশ বলছে, সাদা রঙের দুর্গন্ধযুক্ত পানি গ্রামের দু’একজন অবশ্য পান করেছেন। কিন্তু তাদের কোনও সমস্যা হয়নি। শুক্রবার মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটেছে। কারা এমনটি করেছে, তা এখনও জানা যায়নি।

গ্রামের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, শুক্রবার মধ্যরাতে বোধখানা গ্রামের চা-দোকানি সাইদ হোসেনের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে। এরপর দোকান থেকে কীটনাশক নিয়ে বোধখানা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিউবওয়েল, বোধখানা বাজারের টিউবওয়েল ও একটি বাড়ির টিউবওয়েল এবং দোকানের কেটলি, হাঁড়ি, পানির ড্রামে বিষ ঢেলে দিয়ে যায় চোরেরা। এতে কীটনাশকে বিষাক্ত হয়ে যায় ওসব টিউবওয়েল এবং ড্রামে রাখা পানি। শনিবার সকালে টিউবওয়েল থেকে সাদা রঙের পানি বের হচ্ছিল। যা থেকে বিষের দুর্গন্ধ ছড়ায়। পরে ওসব টিউবওয়েলের মুখ লাল কাপড় বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ পানি পান না করে।

চায়ের দোকানি সাইদ হোসেন বলেন, ‘আমার দোকানে একটা বোতলে বিষ রাখা ছিল। চোরেরা দোকানে চুরির পর বিষের বোতল নিয়ে গ্রামের টিউবওয়েল ও দোকানের ড্রামের পানিতে বিষ ঢেলে রেখে যায়।’

বোধখানা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুর রহমান সাইফ বলেন, ‘পুরো গ্রামের মানুষ এখনও আতঙ্কে আছেন। এখন পর্যন্ত তিনটি টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগের খবর পেয়েছি। ওসব টিউবওয়েল থেকে বিষমিশ্রিত সাদা পানি বের হচ্ছে। চা-দোকানি যদি বুঝতে না পারতেন তাহলে বোধখানা লাশের গ্রামে পরিণত হতো।’

গদখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রিন্স আহমেদ বলেন, ‘এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা যারা ঘটিয়েছে, তারা মানুষ নয়। তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। বিষয়টি পুলিশকে জানিয়েছি। তারা ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করেছে। পুরো গ্রামের মসজিদে মাইকিং করে পানি পান থেকে গ্রামবাসীকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এই গ্রামে ১০ হাজার লোকের বসবাস। অনেক বড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছেন গ্রামের মানুষজন।’

ঝিকরগাছা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইব্রাহীম আলী বলেন, ‘তিনটি টিউবওয়েলে বিষ প্রয়োগ করেছে চোরেরা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। খোঁজখবর নিয়েছে। দু’একজন পানি পান করেছিল। তাদের কিছু হয়নি। তারপরও পানি পরীক্ষার আগে পান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি মাইকিং করে এলাকাবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’