শিশুস্বর্গ খেলাঘরের মানববন্ধন ও সমাবেশ

মশার কামড়ে পড়তে পারছি না

human chain khelaghar 2 Khulna Pic 11-03-16সন্ধ্যা হতেই পড়ার টেবিল ছেড়ে বই, খাতা নিয়ে মশারির মধ্যে ঢুকে পড়ি। মশার কামড়ে টেবিলে বসে পড়া যায় না। খুলনার বয়রা এলাকার ছাত্র তানভীর জামান শুক্রবার এভাবেই মশার উপদ্রব্যের চিত্র তুলে ধরেন।
‘মশার কামড়ে পড়তে পারছি না’ এই শ্লোগানকে ধারণ করে শুক্রবার খুলনা শহরের বয়রা বাজার মোড়ে এক মানবন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মশার ব্যাপক উপদ্রব বেড়ে যাওয়ায় শিশু কিশোর সংগঠন শিশুস্বর্গ খেলাঘর আসর এই কর্মসূচি পালন করে।
সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান মুকুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করে বক্তৃতা করেন উদীচী বয়রা শাখার সভাপতি শহিদুল আলম দিপু, সাধারণ সম্পাদক জিয়া হাসান সুমন, পলাশ দাশ, প্রগতি লেখক সংঘের রোমেল রহমান, খেলাঘরের সহ-সভাপতি সরোজ দাশ পিন্টু, মোস্তাফিজুর রহমান রাসেল, উৎসর্গ রায়, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল ইসলাম সাকিব, রাজিবুল ইসলাম, বাবুল শরীফ বাবু, সৈয়দ আরমান, সুজন হোসেন আকাশ, মিনাক্ষী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, বর্তমানে মশার উপদ্রব খুলনাবাসীর দৈনন্দিন সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ ইতিমধ্যে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে। খুলনাবাসী ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, জিকা ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। বক্তারা খুলনা সিটি করপোরেশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জরুরিভাবে মশা নিধনে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

বয়রা এলাকার গৃহবধূ সালমা বেগম বলেন, দুপুরে খাওয়ার পর ঘুমাতে গেলে মশার কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হয়। গরমের মধ্যে মশারি টাঙানো যায় না। বিকালের পর থেকে মশার উপদ্রব বাড়তে থাকে।

পরিবেশ আইনবিদ সমিতি ‘বেলা’ খুলনা বিভাগীয় সমন্বয়কারী মাহফুজুর রহমান মুকুল বলেন, ঘরে-বাইরে, অফিস-আদালতে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল-কলেজে কোথাও গিয়ে এখন স্বস্তি নেই। দিন নেই, রাত নেই- সব সময় মশার উৎপাত। মশার বংশ বিস্তার রুখতে প্রতিদিন ওষুধ ছিটানো হচ্ছে না এবং ডোবা, নর্দমাসহ মশার প্রজননের স্থানগুলো পরিষ্কার করছে না সিটি করপোরেশন।

মহানগরীর টুটপাড়া এলাকার শেখ আমানুল্লাহ বলেন, মশা নিধনে কেসিসির পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। আগে বাড়িতে বাড়িতে মশার ওষুধ ছিটানো ও ফগার মেশিন দিয়ে ধোঁয়া দেওয়া হতো। কিন্তু এখন আর তা করা হয় না। ফলে সন্ধ্যা হতেই মশারির মধ্যে ঢুকতে হয়। ড্রেনের পাশে চায়ের দোকানগুলোতে মশার কামড়ে এখন আর বসা যায় না।

বয়রা এলাকার নাজমা বেগম বলেন, বাড়ির পাশে ড্রেনটি দীর্ঘদিন ধরে বদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ড্রেন পরিষ্কারের জন্য বা মশা নিধনের ওষুধ দিতে এখন পর্যন্ত কাউকে দেখা যায়নি।

সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার রবিউল ইসলাম বলেন, মশার যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে দিনেও ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ রাখতে হয়। দীর্ঘদিন এ এলাকায় কোনও ওষুধ দিতে দেখা যায়নি।

খুলনা সিটি করপোরেশনের কনজারভেন্সি কর্মকর্তা মো. আনিসুর রহমান বলেন, মশা নিধনে করপোরেশনের সর্বোচ্চ তৎপরতা রয়েছে। লার্ভিসাইড ও লাইট ডিজেল ছিটানোর পাশাপাশি ফগার মেশিন দিয়েও কার্যক্রম চলছে। মশা নিধনের জন্য ওষুধের কোনও সংকট নেই। কেসিসির উদ্যোগে মহানগরীর ড্রেনগুলো থেকে পেরিমাটি তোলাসহ পরিচ্ছন্ন রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এখন নাগরিকদের সচেতনতা প্রয়োজন। নাগরিকরা যদি বাড়ির আঙিনা পরিচ্ছন্ন রাখে তাহলে মশার উপদ্রব বাড়তে পারবে না।

/বিটি/এএইচ/