বেনাপোলে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার, ৩ দিনেও মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন হয়নি

যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার রঘুনাথপুর গ্রাম থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধারের তিন দিনেও মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি পুলিশ। এ অবস্থায় রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও যশোর পুলিশের একাধিক ইউনিট। পরিবারের দাবি, এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।

এর আগে শনিবার (১৪ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির পাশের মাঠ থেকে স্ত্রীর এবং একটি গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় স্বামীর লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশ দুটি উদ্ধারের পর মর্গে পাঠায় বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ। নিহতরা হলেন- রঘুনাথপুর গ্রামের প্রয়াত ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে মনিরুজ্জামান (৫২) ও তার স্ত্রী রেহানা খাতুন (৪৫)। এই দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। পরিবারে চলছে শোকের মাতম। বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন সন্তানরা। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের দাবি জানিয়েছেন তারা। 

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত ১৩ জুন রাতের কোনও এক সময়ে হত্যাকাণ্ড ঘটে। ১৪ জুন ভোর ৬টার দিকে গ্রামের লোকজন মনিরুজ্জামানের লাশ বাড়ির উঠানের পাশে গাছের সঙ্গে অর্ধ ঝুলন্ত অবস্থায় এবং বাড়ির পাশের মাঠে স্ত্রীর লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। এর মধ্যে মনিরুজ্জামানের শরীরে কাদামাটি লেগে ছিল। দেখে বোঝা যায়, কোথাও থেকে টেনেহিঁচড়ে এনে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া লাশটি হাঁটু গাড়া অবস্থায় ছিল। বাড়ির পাশের মাঠে স্ত্রীর লাশ ফেলে রাখা অবস্থায় ছিল। যা দেখে আত্মহত্যা বলে মনে হচ্ছে না পুলিশ ও পরিবারের। যে কারণে এটিকে জোড়া হত্যাকাণ্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।

নিহত দম্পতির মেয়ে মনিরা আক্তার (৩০) ও ছেলে মাসুদের (১৮) দাবি, তাদের বাবা-মা আত্মহত্যা করেননি। তাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তারা দ্রুত হত্যার রহস্য উন্মোচন ও ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের দাবি জানান। সেইসঙ্গে হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তি চান তারা।

বেনাপোল পোর্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনও মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।’

বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এটি হত্যাকাণ্ড নাকি আত্মহত্যা, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছে। পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই যশোরসহ আরও কয়েকটি টিম কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে মৃত্যুর রহস্য জানা যাবে।’