যশোরের শহরের সার্কিট হাউসপাড়ায় ইকবাল মঞ্জিলের একটি আটতলা নির্মাণাধীন ভবনের ৬ তলার ঝুল বারান্দা ভেঙে পড়ে দুই প্রকৌশলীসহ তিন জন মারা গেছেন। মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তারা হলেন- দিনাজপুরের প্রকৌশলী আজিজুর রহমান (৩৫), কুষ্টিয়ার প্রকৌশলী মিজানুর রহমান মিজান (৪০) ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নুরু (৪৫), যিনি সাব-কন্ট্রাক্টরের কাজ করতেন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মো. শাকিরুল ইসলাম জানান, নিহতদের মাথায় আঘাত লাগে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ভবনে কাজ করা ইলেকট্রিক মিস্ত্রি মুজিবুর রহমান জানান, বেলা ১১টার দিকে ভবনটির ষষ্ঠ তলার ব্যালকনি ভেঙে গেলে এই তিন জন নিচে পড়ে যান।
স্থানীয় বাসিন্দা লাবু জোয়ার্দার বলেন, ‘বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাসায় ছিলাম। বাচ্চাকে স্কুলে নিয়ে যাওয়ার সময় বিকট শব্দ শুনে বাইরে এসে দেখি বিল্ডিংয়ের ঝুল বারান্দা ভেঙে রাস্তার ওপরে তিন জন পড়ে আছেন। রাস্তায় রক্ত। এরপর আমরা স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের তিন জনকে ইজিবাইকে উঠিয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। শুনেছি ঘটনাস্থলেই দুজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর একজন মারা গেছেন। মৃতদের মধ্যে দুই প্রকৌশলীকে চিনতাম।’
আরেক প্রতিবেশী নাজমুল হাসান বিপুল বলেন, ‘এই কনস্ট্রাকশনের কাজ চলছে সম্পূর্ণ নিয়মবহির্ভূতভাবে। তারা রাস্তার ওপরে নির্মাণসামগ্রী রেখে চলাচলে সমস্যা করে। অনেকবার বলেও কাজ হয়নি। শুনেছি ভবন মালিক মি. ইকবাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটাত্মীয়। সেই কারণে তিনি কাউকে পরোয়া করতেন না। এই এলাকায় সরকারি এমএম কলেজ, যশোর জিলা স্কুলসহ বেশ কয়েকটি কোচিং সেন্টার রয়েছে। এই পথে সব সময়ই লোক চলাচল করে। এমন দুর্ঘটনায় আমরা হতবিহ্বল।’
এ বিষয়ে বিল্ডিং ফর ফিউচার লিমিটেডের ম্যানেজার বাবলু রহমান জানিয়েছেন, এই বিল্ডিংয়ের নির্মাণকাজ ২০১০ সাল থেকে শুরু হয়েছিল। মৃতদের মধ্যে দুজন প্রকৌশলী ও একজন সাব-কন্ট্রাক্টর রয়েছেন। কীভাবে দুর্ঘটনাটি ঘটলো সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, বেলা আনুমানিক সাড়ে ১১টার দিকে নির্মাণাধীন একটি বিল্ডিংয়ের ঝুল বারান্দা ভেঙে তিন জন মারা গেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ টিম রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।