আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করলেন এনসিপির নেতারা

ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মারধরে নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এসসিপি) কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ নেতারা। 

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে পৌঁছান তারা। পরে ১টার দিকে তারা আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। এরপর তারা আবরারের পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন।

আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ ও মা রোকেয়া খাতুনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এরপর এনসিপি কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। ১টা ২৮ মিনিটের দিকে তারা কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। তারা কুষ্টিয়া শহরে পদযাত্রা শেষে মেহেরপুরে যাবেন।

জনতার অধিকার প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের কাঠামোগত সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে দেশব্যাপী ‘জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে এনসিপি। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে কুষ্টিয়া শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও পদযাত্রা করবেন নেতাকর্মীরা।

এর আগে তারা সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫মিনিটে কুষ্টিয়া শহরে পৌঁছান এবং অভিজাত আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেন। সোমবার রাত ১০টায় তারা পাবনায় পথসভা ও পদযাত্রা করেন। সেখানে এ কর্মসূচি শেষ করে কুষ্টিয়ার উদ্দেশে রওনা হন। 

সেখানে রয়েছেন- এনসিপির কেন্দ্রীয় কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, ড. আতিক মুজাহিদ, সাইফুল্লাহ হায়দার, আসাদুল্লাহ আল গালিব, আবু সাঈদ লিয়ন, ডা. মাহমুদা আলম মিতু, মোহাম্মদ আতাউল্লাহ ও কেন্দ্রীয় সদস্য ফিহাদুর রহমান দিবস প্রমুখ। 


এছাড়া এনসিপির অঙ্গ সংগঠন যুব শক্তি ও শ্রমিক উইংয়ের কেন্দ্রীয় নেতারা এবং কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। দায়ের হয় হত্যা মামলা। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।