মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

কারাদণ্ড

শেরপুরে নিজের মেয়েকে ধর্ষণের দায়ে হানিফ উদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুপুরে শিশু আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ মুসলেহ উদ্দিন এ আদেশ দেন। এসময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু।

আদালত সূত্রে জানা যায়, হানিফ উদ্দিন বিয়ের পর থেকেই সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের ধোপাঘাট হদিপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই হিসেবে ছিলেন। হানিফ অলস ও জুয়ারি হওয়ার কারণে তার স্ত্রী একাই কষ্ট করে সংসার চালাতেন। ওই অবস্থায় তাদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে হয়। ভিকটিম তাদের বড় মেয়ে (১৪)। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সে বাড়িতেই থাকতো। এ সুযোগে নজরুল তার মেয়ে নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রায়ই ধর্ষণ করতো বলে ভিকটিম জানায়। পরে সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার মাসহ আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সে বাবা কাছে নির্যাতিতর হওয়ার কথা জানায়। এ ঘটনায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর নির্যাতিতার মা বাদী হয়ে তার বাবা হানিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে শেরপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই দিন ওই মামলায় নির্যাতিত কিশোরীও আদালতে জবানবন্দি দেয়। ওই সময় জেলা হাসপাতালে তার ডাক্তারি পরীক্ষাও করা হয়। পরে নিরাপত্তার অভাবে ২৩ অক্টোবর ওই কিশোরীকে গাজীপুরের কোনাবাড়ী কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ২৫ অক্টোবর আসামি হানিফ উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন সেও আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি হানিফের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯ (১) ধারায় আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জীবন চন্দ্র বর্মণ।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি নির্যাতিতা কিশোরী ঢাকার আজিমপুর ছোটমনি নিবাসে (বেবি হোম) থাকাবস্থায় তার একটি ছেলে হয়। ৩ দিন পর শিশুটি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ২০ মার্চ মামলাটি বিচারের জন্য শিশু আদালতে বদলি করা হয় এবং পরদিনই আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ গঠন করা হয়। আদালতে ৯ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বৃহস্পতিবার  হানিফ উদ্দিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন বিচারক।

শিশু আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু জানান,প্রথম থেকেই এই মামলায় আসামীপক্ষের কোনও আইনজীবী ছিলে না। সবার ঘৃণার কারণেই এই অবস্থা হয়েছে। এছাড়া মামলাটির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড না হওয়ায় আসামিপক্ষে কোনও স্টেট ডিফেন্সও দেওয়া হয়নি।

/জেবি/

আরও পড়তে পারেন: ভবন নির্মাণে রডের বদলে বাঁশ: কাজ বন্ধ করে দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ