জামালপুর-৩

আ.লীগের দুর্গ দখলে নেওয়ার স্বপ্নে বিভোর বিএনপি

মির্জা আজম ও মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল (ছবি– প্রতিনিধি)

জামালপুর-৩ আসন আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত। এখানে এপর্যন্ত ছয় বার জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনেও এ আসন থেকে জয় পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ক্ষমতাসীনেরা। এদিকে, একবার জয় পাওয়া বিএনপি এ আসন থেকে এবার নির্বাচিত হওয়ার স্বপ্ন দেখছে। একই স্বপ্ন দেখছে এ আসনে দুই বার জয় পাওয়া জাতীয় পার্টিও।

মেলান্দহ ও মাদারগঞ্জ উপজেলা নিয়ে জামালপুর-৩ আসন। দুই উপজেলা, তিন পৌরসভাসহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে ১৯৯১ সাল থেকে টানা পাঁচ বার জয় পেয়েছেন বর্তমান বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম। আসনটিতে বর্তমানে ভোটার সংখ্যা চার লাখ ২৪ হাজার ৫৭৫ জন। পুরুষ ভোটার দুই লাখ ১২ হাজার ৫৬৮ জন, মহিলা ভোটার দুই লাখ ১২ হাজার সাত জন।

জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে অনেক আগে থেকেই এ আসনে আওয়ামী লীগের একক সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ব্যাপক গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন মির্জা আজম। জামালপুরের ৫টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে এই আসনে। দীর্ঘ সময় ধরে সংসদ সদস্য থাকার কারণে মির্জা আজম তার নির্বাচনি এলাকায় রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট ও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করেছেন। জেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সাত উপজেলায় দলের সাংগঠনিক কাঠামো সুসংহত রাখতে ভূমিকা পালন করে চলেছেন তিনি। জামালপুর-৩ আসনে একজন জনপ্রিয় নেতা হিসেবে মির্জা আজম এরইমধ্যে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ছাড়া, এ আসন সবসময় তার দখলে থাকায় এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কেউ নির্বাচন করেন না। আর এ কারণেই প্রতি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই আসনে প্রার্থীর সংখ্যাও কম থাকে।  

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ আসনে বিএনপির একক সম্ভাব্য প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল ব্যবসায়িক কারণে ঢাকায় অবস্থান করলেও মাঝেমধ্যে এলাকায় এসে নির্বাচনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। তবে বেশিরভাগ সময় তার অনুপস্থিতির কারণে এলাকায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। আর এ কারণেই বর্তমানে এ আসনটিতে বিএনপি অনেকটাই দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। তারপরও এ আসন থেকে জয়ের স্বপ্ন দেখছেন মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল।

স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপে জানা যায়, এ আসনে নিজেদের দুর্বল অবস্থান শক্তিশালী করতে হলে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলসহ জেলা বিএনপির নেতাদের এলাকায় যথেষ্ট সময় দিতে হবে। মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলসহ দলটির নেতাদের আনাগোনা বাড়লে দলের প্রতি আস্থা ফিরে পাবে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

এদিকে, এই আসন থেকে জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মেলান্দহ উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মীর সামসুল আলম লিপটনও দলীয় মনোনয়ন পেতে এলাকায় জোর গণসংযোগ করছেন। তিনি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন। পরে দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি তার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেন। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি এই আসন থেকে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন বলে জানা গেছে।