এলাকাবাসী জানায়, দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের বাহাদুরাবাদ থেকে কাঠারবিল ও তারাটিয়া হয়ে সানন্দাবাড়ি পর্যন্ত দীর্ঘ ৩৬ কিলোমিটার রাস্তায় অন্তত ১০টি বাঁশের সাঁকো তৈরি করছে এলাকাবাসী। এসব সাঁকোর ওপর দিয়ে পথচারীরা কোনোমতে যাতায়াত করেন।
এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কটি বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের কান্দিরগ্রাম এলাকায় পাকা সড়ক ভেঙে কয়েকটি স্থানে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। কান্দিরগ্রাম বটতলায় নতুন খালের ওপর অস্থায়ীভাবে স্থানীয়রা বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেছেন। তারা সেখানে পথচারীদের কাছে পারাপারের জন্য পাঁচ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছেন।
তারাটিয়া বাজার এলাকার অটোরিকশা চালক দুলাল মিয়া জানান, দেওয়ানগঞ্জ-সানন্দাবাড়ি সড়কের কাঠারবিল, ঝালোরচর, সবুজপুর, মিতালি বাজার, তারাটিয়া বাজারসহ জলব্রিজ পর্যন্ত রয়েছে চারটি বাঁশের সাঁকো এবং অসংখ্য ভাঙা আর খানাখন্দে ভরা পাকা রাস্তা। এসব রাস্তা দিয়ে কোনও যানবাহন চলে না। তাই তারা তাদের অটোরিকশা কান্দির গ্রাম এনেছেন। এই ছোট সড়কে চাহিদার তুলনায় বেশি পরিমাণ অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় করেন তাতে সংসার চালোনো কঠিন হয়ে পড়ছে তাদের।
পথচারী সামাদ মিয়া, আব্দুল বারেক, শ্রী পরেশ ঘোষসহ অনেকেই জানান, সানন্দবাড়ি থেকে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা সদরে আসার একমাত্র উপায় পায়ে হেঁটে যাতায়াত করা। তারা কাঠারবিল এবং তারাটিয়া বাজার এলাকা থেকে দীর্ঘপথ পায়ে হেঁটে আবার কোথাও কোথাও অটোরিকশায় চেপে এসেছেন।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হাসান বলেন, ‘এবারের বন্যায় দেওয়ানগঞ্জের মোট ৮টি ইউনিয়নসহ ১টি পৌরসভার ১৬৩টি গ্রাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক জরিপে এ উপজেলায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পাকা সড়ক এবং ৫০টি ব্রিজ-কালভার্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও যমুনা নদী ভাঙনে ২৮০টি পরিবার বসতভিটা হারিয়েছেন।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী বিভাগের উপজেলা প্রকৌশলী মো.আরিফ হোসেন বলেন, ‘দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় চলতি বছর বন্যায় ১৩৩ কিলোমিটার পাকা রাস্তা এবং ১৫০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ৬৫টি ব্রিজ কালভার্ট, বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবকিছু মিলে প্রায় দেড়শ’ কোটি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’