ইসলামপুর উপজেলায় একটি পৌরসভা এবং আরও ১২টি ইউনিয়নের লোকসংখ্যা প্রায় ৪ লাখ। চিকিৎসক সংকটের কারণে রোগীদের ছুটতে হচ্ছে সদর জেনারেল হাসপাতাল ও ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
উপজেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালটিতে মোট ৩৩ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচ অ্যান্ড এফপি) ডা. একেএম শহীদুর রহমান গত ৩০ অক্টোবর অবসরে চলে গেলে পদটি শূন্য হয়। এছাড়া আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) পদ দীর্ঘ দিন ধরে শূন্য রয়েছে। জুনিয়র কনসালটেন্ট মোট ১০ জন, মেডিক্যাল অফিসার (এমও) পদে ৪ জন, সহকারী সার্জন পদে ২ জন, আইএমও ১ জন, ইএমও ১ জন, প্যাথলজিস্ট ১ জন, এ্যানেসথেটিস্ট ১ জন, ডেন্টাল সার্জন ১ জন, এমও (ইউ/আয়ু/হোমিও) ১ জনসহ মোট ২৫ জন চিকিৎসকের পদ শূন্য রয়েছে।
প্রেষণে অন্য হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসকদের মধ্যে এমও ডা. আবু সালেহ মো. মহিউদ্দিন ২০১৬ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ঢাকার মুগদা হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। সহকারী সার্জন ডা. মো.আরিফল ইসলাম ২০১৫ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি প্রেষণে বদলি হয়ে টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপালে কর্মরত। এছাড়া সহকারী সার্জন ডা. তাহমিনা আয়শা ও সহকারী সার্জন ডা. মাসুম বিন নুর আইএইচটি ইসলামপুরে কর্মরত রয়েছেন। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাক্টিসের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার স্বাস্থ্যসেবা-প্রার্থীদের। অথচ এই চিকিৎসকরা বেতন পাচ্ছেন ইসলামপুর হাসপাতাল ফান্ড থেকেই।
এদিকে, হাসপাতালটির ২টি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও একটি দীর্ঘদিন ধরে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। অ্যানেসথেসিয়া ও সার্জারি বিভাগে ডাক্তারের সংকটের কারণে পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটারটি (ওটি) গত ৫ বছর ধরে বন্ধ। এতে ওটির মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হচ্ছে। এছাড়া, হাসপাতালের একমাত্র আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটিও দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট।
স্থানীয় ভুক্তভোগী রোগী আব্দুল কালাম জানান, আগে ওটিতে সিজারের অপারেশনসহ বিভিন্ন ধরনের অপারেশন হতো। এতে কম পয়সায় চিকিৎসা পেতাম।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের কর্মরত সহকারী সার্জন ডা. তানোয়ার ইসলাম চৌধুরী পান্না বলেন, ‘চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালটি চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে । রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি।’
ইসলামপুর হাসপাতালে ডাক্তার সংকট বিষয়ে জামালপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার গৌতম রায় বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগে বহুবার জানিয়েছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমি আবারো স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করবো।’
এ প্রসঙ্গে স্থানীয় এমপি ফরিদুল হক খান দুলাল বলেন, ‘হাসপাতালে ডাক্তার সংকট মোকাবিলায় স্বাস্থ্য বিভাগে যোগাযোগ করেছি। অচিরেই এর সমাধান হবে।’