ব্যবসায়ী মজনু হত্যা মামলায় মা-মেয়েসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন

জামালপুরে চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী মজনু হত্যা মামলায় মা-মেয়েসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন জামালপুর সিনিয়র দায়রা জজ আদালত। সেই সঙ্গে মামলার প্রধান আসামি জান্নাতুল ফেরদৌস শাপলাকে ৫০ হাজার ও বাকি দুজনকে ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়েছে।

রবিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে এই রায় দেন জামালপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জুলফিকার আলী খাঁন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—জামালপুর সদর উপজেলার ডেংগারগড় গ্রামের মো. আলতাফ হোসেন মুরাদের মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে শাপলা (২৭), মো. আলতাফ হোসেন মুরাদের স্ত্রী মোছা. সুফিয়া আক্তার রিনা (৪৫) এবং সদর উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের মো. হাবিবুর রহমান ওরফে সুরুজ ডাক্তারের ছেলে মো. এহসান আহম্মেদ ওরফে সোহাগ (২৮)।

মামলার রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নির্মল কান্তি ভদ্র জানান, প্রায় ১২ বছর আগে সদর উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামের আ. বারী সরকারের ছেলে মিজানুর রহমান মজনুর সঙ্গে শহরের পলাশগড় গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে লাকির বিয়ে হয়। মজনুর সঙ্গে দণ্ডিত শাপলার অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে তাদের দাম্পত্য কলহ বাধে। একপর্যায়ে লাকি শিশুপুত্রকে নিয়ে জামালপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। এ ঘটনা জানাজানি হলে মজনুর সঙ্গে তার স্ত্রী স্কুলশিক্ষিকা ফারজানা ইসলাম লাকির ঝগড়া বাঁধে। ফারজানা শিশুপুত্রকে নিয়ে জামালপুর শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। এর মধ্যে ২০১৩ সালের ৭ মে মজনু সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন সকালে ডেংগার গড় গ্রামের খেলার মাঠের পাশের একটি পতিত জমিতে তার লাশ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় ওই দিনই নিহতের মা হাসিনা বেগম (৬৫) পুত্রবধূ লাকিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় মজনুর স্ত্রী লাকিকে চার্জশিট থেকে বাদ দেওয়া হয়। মজনুর মোবাইলের কললিস্ট পর্যালোচনা করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে শাপলা ও তার মা, তাদের সহযোগী সোহাগ ও ডেংগার গড়ের আতর আলীর ছেলে আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর বিচারে অভিযোগপত্রে উল্লেখিত ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সিনিয়র দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জুলফিকার আলী খাঁন এই রায় প্রদান করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, অ্যাডভোকেট আনোয়ারুল করিম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মো. মোশাররফ হোসেন।