দেড় বছরেরও বেশি সময় বন্ধের পর দেশের স্কুল-কলেজ খুলেছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ময়মনসিংহের বেশকিছু বিদ্যালয় থেকে চুরি হয়ে গেছে টিউবওয়েল, সাইনবোর্ড, জানালার গ্রিল, পানির পাইপ ও ট্যাংক। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যালয়ের মাঠ, বেঞ্চ ও টেবিল। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে গ্রামের বিদ্যালয়গুলোতে।
সরেজমিন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বালিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে আছে। করোনাকালীন বন্ধ থাকার ফলে বিদ্যালয় থেকে চুরি হয়েছে সাইনবোর্ড, টিউবওয়েল, পানির ট্যাংক, জানালা ও গ্রিল।
একই অবস্থা আলাদিয়ার আলগী ইমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এই বিদ্যালয়েও টিউবওয়েল, জানালা, গ্রিল ও পাইপ চুরি হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে টয়লেট, মাঠ ও স্থাপনা। বাদ যায়নি তারুন্দিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও।
বালিহাটা গ্রামের আবুল কাশেম জানান, দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও মাঝে মাঝে এসে খোঁজ-খবর নিয়েছেন শিক্ষকরা। মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না। করোনাকালীন বিদ্যালয়ের জানালা ও গ্রিলসহ বেশকিছু জিনিস চুরি হয়েছে।
একই উপজেলার আলাদিয়ার আলগী ইমান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য আলেক উদ্দিন জানান, তাদের প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষকদের অবহেলার কারণে ধ্বংসের পথে। করোনাকালীন টিউবওয়েল ও পানি ট্যাংকের পাইপ চুরির পাশাপাশি দরজা-জানালা ও বাথরুম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বালিহাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, দীর্ঘ সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সাইনবোর্ড, পানির ট্যাংকি ও জানালার গ্রিল চুরি হয়েছে। ব্যবহার না হওয়ায় নষ্ট হয়ে গেছে টিউবওয়েল। মাঠের অবস্থাও খারাপ। মাঠ সংস্কার করার জন্য বালু আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সরকারি ফান্ড না থাকায় নিজের পকেট থেকে খরচ করার কথা জানান তিনি।
আলাদিয়ার আলগী ইমান আলী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ার জাহাঙ্গীর বলেন, বিদ্যালয়ের মূল ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ। নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হলেও করোনার পর ঠিকাদার চলে গেছেন। এজন্য কিছুটা ঝুঁকি নিয়েই ক্লাস নিতে হবে। আমাদের বিদ্যালয়সহ অন্য জায়গাতেও কমবেশি চুরি হয়েছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
তারুন্দিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ক্লাস বন্ধ থাকায় ধুলাবালিতে বেঞ্চ ও রুম নষ্ট হয়েছিল। সবার চেষ্টায় পরিষ্কা-পরিছন্ন করা সম্ভব হয়েছে। পানির ট্যাংকের পাইপ ও মুখ চুরি হয়ে গেছে। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্যমতে, ময়মনসিংহ জেলায় দুই হাজার ১৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী আছে পাঁচ লাখ ৪৮ হাজার ৬৫। আজ রবিবার থেকে সব বিদ্যালয়েই ক্লাস শুরু হয়েছে।
দীর্ঘ বন্ধের সময়ে বিদ্যালয়ের জিনিসপত্র চুরি হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানা নেই দাবি করে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিউল আলম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবেদন করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতনদের কাছে প্রস্তাবনা আকারে পাঠানো হবে।