মন্ত্রিসভা থেকে ডা. মুরাদ হাসানের পদত্যাগের খবরে আনন্দ মিছিল করেছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ডা. মুরাদ হাসান জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনের সংসদ সদস্য।
মঙ্গলবার (০৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সরিষাবাড়ী পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুতের নেতৃত্বে উপজেলার শিমলা বাজার থেকে আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি বাস টার্মিনাল সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ থেকে ডা. মুরাদ হাসানকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান স্থানীয় নেতারা।
মঞ্জুরুল ইসলাম বিদ্যুত বলেন, দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন ডা. মুরাদ হাসান। তাকে দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাই।
এদিকে, সরিষাবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আল-আমিন হোসাইন শিবলুর নেতৃত্বে আরও একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। আরামনগর বাজার ট্রাকস্ট্যান্ড থেকে মিছিলটি শুরু হয়ে উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সেখানে ডা. মুরাদ হাসানের কুশপুত্তলিকা দাহ করেন নেতাকর্মীরা।
সরিষাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. ছানোয়ার হোসেন বাদশা বলেন, স্কুল-কলেজ জীবনে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না ডা. মুরাদ হাসান। ১৯৯৩ সালে মুরাদ হাসান ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়ে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৯৬ সালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ শাখা ছাত্রদলের প্রচার সম্পাদক করা হয়। পরে ছাত্রলীগে যোগ দেন। যদিও তার বাবা অ্যাডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদার জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। মুরাদ হাসানকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। একই সঙ্গে তাকে জেলা কমিটির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় আমরা খুশি।
অশালীন ও শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্যের ঘটনায় ডা. মুরাদ হাসানকে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকাল ৫টায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জরুরি বৈঠকে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে বাংলা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট বাকী বিল্লাহ। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত রয়েছেন। ডা. মুরাদ হাসান জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের পর ‘ব্যক্তিগত কারণ’ দেখিয়ে মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। মঙ্গলবার ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র মন্ত্রণালয়ের সচিবের দফতরে পাঠানো হয়েছে। দফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এদিন দুপুর ১২টার দিকে তথ্য প্রতিমন্ত্রীর জনসংযোগ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন আহমেদ জানান, মুরাদ হাসান বর্তমানে চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। দফতর থেকে পদত্যাগপত্র টাইপ করে তার কাছে পাঠানো হয়েছে।