মা-মেয়েকে হত্যার ঘটনায় ছেলে ও পুত্রবধূ আটক

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলায় মা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যার অভিযোগে দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। তারা হলেন নিহত মা জয়ফল বেগমের ছেলে জহুরুল ইসলাম ও পুত্রবধূ জেসমিন আক্তার।

রবিবার (২ জানুয়ারি) এ ঘটনায় জয়ফলের ভাই মানিক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এর আগে জয়ফলের ছেলে ও পুত্রবধূকে আটক করে পুলিশ। 

শনিবার (১ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে পৌরসভার গোবিন্দপুর গাড়োয়ালপাড়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলেন ওই এলাকার মৃত আকমল হোসেন চৌধুরীর স্ত্রী জয়ফল বেগম (৫৫) এবং তার মেয়ে স্বপ্না আক্তার (২৫)।

পুলিশ জানায়, স্বামী আকমল চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিন ছেলে ও দুই মেয়ে নিয়ে জয়ফল ওই বাড়িতে বসবাস করতেন। তার দুই ছেলে ওমান প্রবাসী। আটক জহুরুল সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। সাত বছর আগে স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ির পর মায়ের সঙ্গে থাকতেন স্বপ্না।

এলাকাবাসী জানান, জয়ফল বেগমের ওমান প্রবাসী ছেলে মিস্টার দুই দিন ধরে মায়ের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। শনিবার সন্ধ্যায় মিস্টার ওমান থেকে তার মামা মানিকের কাছে ফোন করে মায়ের খোঁজ নিতে বলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মানিক বাড়িতে গিয়ে জয়ফলের ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ দেখেন। তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে ঘরের দরজা ভেঙে বিছানায় বোন ও ভাগনির গলাকাটা লাশ দেখতে পান।

খবর পেয়ে রাত ৮টার দিকে জয়ফল ও তার মেয়ে স্বপ্নার লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। ঘটনাস্থল থেকে একটি ধারালো বঁটি উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, দুই দিন আগে মা ও বোনের সঙ্গে ঝগড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি চলে গিয়েছিল জহুরুল। স্থানীয়দের অভিযোগের ভিত্তিতে জহুরুল ও তার স্ত্রীকে আটক করেছে পুলিশ।

মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এম ময়নুল ইসলাম বলেন, মা-মেয়ের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বঁটি উদ্ধার করা হয়েছে। জয়ফলের ছেলে জহুরুল ও পুত্রবধূ জেসমিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে। এ ঘটনায় জয়ফলের ভাই মানিক মিয়া বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেছেন। তবে ওই মামলায় ছেলে ও পুত্রবধূকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি।

জামালপুরের পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, গলাকাটা ছাড়াও তাদের শরীরে কোপের চিহ্ন রয়েছে। পুলিশের একাধিক টিম হত্যার রহস্য উদঘাটনে কাজ করছে। পারিবারিক বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি আমরা।