বিদ্যালয় খোলা, ক্লাসে শিক্ষার্থীদের রেখে বাড়িতে শিক্ষকরা

ময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার পুটিজানা ইউনিয়নের গোসাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্লাসে উপস্থিত থাকলেও শিক্ষকরা ছিলেন না। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে রেখে বাড়িতে চলে গেছেন শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার (০৭ এপ্রিল) দুপুর দেড়টার দিকে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এ নিয়ে স্বপ্নীল স্বপন নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এরপর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

স্থানীয় অভিভাবক আব্দুল হামিদ ও সাংবাদিক স্বপ্নীল স্বপন জানান, দুপুর দেড়টার দিকে গোসাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখেন, ক্লাসে শিক্ষার্থীরা বসে আছে। কিন্তু কোনও শিক্ষক নেই। কয়েকজন শিক্ষার্থী ক্লাসে এবং কয়েকজন মাঠে খেলাধুলা করছে।

শিক্ষার্থীরা জানায়, বিদ্যালয়ে এসে কোনও শিক্ষককে দেখতে পায়নি তারা। এজন্য খেলাধুলা করছে। কখন শিক্ষকরা আসবে তা জানে না তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোসাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ২০১৩ সালে সরকারিকরণ করা হয়। শিক্ষকরা বিদ্যালয়ে নিয়মিত না আসায় অনেক শিক্ষার্থী আশপাশের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে চলে গেছে। বর্তমানে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২০ শিক্ষার্থী রয়েছে। পাঁচ পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন দুজন শিক্ষক।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি অসুস্থ থাকায় দুপুর ১২টার দিকে অপর শিক্ষক জহিরুল আলম কয়েসকে দায়িত্বে রেখে বাড়িতে চলে আসি। দুপুর ১টার পর শিক্ষার্থীদের স্কুলে রেখে জহিরুল আলম কয়েস বাড়ি চলে যান। এজন্য শিক্ষার্থীদের আজ পাঠদান করা যায়নি। তবে নিয়মিত আমরা পাঠদান করি।’

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকী বলেন, ‘বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। রমজানে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যালয় খোলা থাকার পরও শিক্ষক কেন অনুপস্থিত এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। এরপর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুটিজানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান রয়েল বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। বিদ্যালয় সরকারি হওয়ার পর থেকে নতুন শিক্ষকদের নিয়োগ দেওয়া হলেও কিছুদিন দায়িত্ব পালন করে অন্য প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা চলে যান। শিক্ষক স্বল্পতায় এমনিতেই শিক্ষার্থীদের যথাযথ পাঠদান করা যাচ্ছে না। এরপরও যারা কর্মরত আছেন তারা যদি অনুপস্থিত থাকেন তাহলে পাঠদান চলবে কীভাবে। বিষয়টি দুঃখজনক। তদন্তপূর্বক ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।’