ভাষাসৈনিক আজিম উদ্দিন আর নেই

ভাষাসৈনিক আজিম উদ্দিন আহমেদ মারা গেছেন। শনিবার (১৬ জুলাই) সকাল ৭টার দিকে বার্ধক্যজনিত কারণে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। ভাষা আন্দোলন করতে যাওয়ায় তৎকালীন পাকিস্তান সরকার আজীবনের জন্য তার ছাত্রত্ব কেড়ে নিয়েছিল।

ভাষা আন্দোলনে যুক্ত থাকায় এবং তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে নিজের লেখা কবিতা সাহিত্য সম্মেলনে পাঠ করার কারণে স্কুল থেকে আজীবনের জন্য ছাত্রত্ব (রাজটিকিট) বাতিল করা হয়েছিল আজিম উদ্দিন আহমেদের। এতে তার প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। ছয় ছেলে ও তিন মেয়ের জনক আজিম উদ্দিন। জীবনের ৮৯টি বছর অতিক্রম করে মৃত্যুকালে বহু গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তার ছেলে নুরুল আমিন জানান, পূর্বধলার জারিয়া এলাকার নিজ গ্রাম নাটেরকোণা মাদ্রাসা মাঠে বিকাল সাড়ে ৫টায় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

ভাষা আন্দোলন চলাকালে আজিম উদ্দিন নেত্রকোনা শহরের আঞ্জুমান উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। তখন তিনি মহকুমা ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন। একই বছর তিনি বাংলা ভাষার অধিকার নিয়ে নেত্রকোনা মহকুমা সাহিত্য সম্মেলনে নিজের লেখা দুটি কবিতা ‘আজব ভুঁড়ি ও হে বিলাসী’ পাঠ করেন। কবিতা দুটি তৎকালীন সরকারের বিরুদ্ধে যাওয়ায় ১৯৫৩ সালে স্কুল থেকে আজীবনের জন্য তার ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। তবে ৬২ বছর পর ২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সরকারের পক্ষে তৎকালীন জেলা প্রশাসক ড. তরুণ কান্তি শিকদার তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেত্রকোনা আঞ্জুমান আদর্শ সরকারি বিদ্যালয়ের ছাত্রত্ব ফিরিয়ে দেন।

আজিম উদ্দিন পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া নাটেরকোণা গ্রামের ব্যবসায়ী মরহুম শেখ শমসের আলী ও তাহমিনা রতিজনের সন্তান। শুধু ভাষা সৈনিকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক।

তার শেষ বয়সের স্মৃতি রোমন্থন করে স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম মোস্তফা বলেন, একটি আক্ষেপের কথা প্রায়ই বলতেন, ভাষা সৈনিকদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি কী সরকার দেবে।