গৃহবধূকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের অভিযোগ, জা আটক

জামালপুরের বকশীগঞ্জে গাছের সঙ্গে বেঁধে এক গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় একজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঘটনার পর ভুক্তভোগীর স্বামী, ভাসুর ও জা-রা পলাতক রয়েছেন। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নে ঘটনাটি ঘটে।

এলাকাবাসী জানান, ১২ বছর আগে তার বিয়ে হয়। তিন বছর আগে তার স্বামী সৌদি আরবে যায়। মাস খানেক আগে দেশে ফিরে এসে পরকীয়া সন্দেহে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। নির্যাতনের একপর্যায়ে ২৩ আগস্ট স্ত্রীকে বাবার বাড়িতে রেখে আসে স্বামী। পরে ওই গৃহবধূ শুনতে পান, তাকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বামী। ঘর রক্ষার জন্য সোমবার দুপুরে শ্বশুরবাড়িতে ছুটে আসেন। আসার পর ভাসুর ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে তার স্বামী ও তিন জা মিলে নির্যাতন চালায়। এর ছবি-ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।

খবর পেয়ে বকশীগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে গৃহবধূকে উদ্ধার করে ও নির্যাতনের অভিযোগে বড় জা-কে আটক করে। পুলিশ আসার খবর পেয়ে স্বামীসহ বাকিরা পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগীর মা দাবি করেন, ‘মেয়ের সুখের জন্য পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে মেয়ে জামাইকে বিদেশ পাঠানো হয়েছে। বিদেশে গিয়ে সব টাকা পয়সা বড় ভাই ও ভাবিদের নামে পাঠিয়েছে। স্ত্রী নামে প্রতি মাসে দুই হাজার টাকা পাঠাতো। দেশে ফিরে অহেতুক সন্দেহ করে খারাপ আচরণসহ শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। আজ শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গেলে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করে জামাইসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। মেয়ে নানা অত্যাচার সহ্য করে সংসার করে আসছিল। নির্যাতনের পর তাদের অপরাধ ঢাকতে মেয়ের নামে মিথ্যা অপবাদ ছড়াচ্ছে। আমার মেয়ে এমন না, খুবই সহজ-সরল ধৈর্যশীল।’

ভুক্তভোগীর ভাসুর ইউপি চেয়ারম্যান অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, ‘ছোট ভাইয়ের বাড়িতে এসে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। তাকে নিবৃত করতে গাছের সঙ্গে সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় একটি তালাকনামাও দেখানো হয়েছে। আমার পরিবারের কেউ নির্যাতন করেনি।’

এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ থানার এসআই আবু শরিফ উদ্দিন জানান, ঘটনা শোনার সঙ্গে সঙ্গে গৃহবধূকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। এ ঘটনায় এক নারীকে আটক করা হয়েছে। ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।