আশ্বিনের শেষে প্রকৃতিতে শীত আসার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। সকালে ঘুম থেকে উঠলে দেখা মেলে শিশির ভেজা প্রকৃতির। এসময় বিভিন্ন জলাধারে পানি কমছে, বাড়ছে নানা জাতের পাখির আনা-গোনা। পাশাপাশি বিল-ঝিলে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছে নানা রঙয়ের শাপলা, পদ্ম ও কচুরির ফুল। শিশিরে ভেজা লাল, সাদা, হলুদ, বেগুনি রঙয়ের শাপলা ফুলের পাপড়িতে সকালের নরম রোদ পড়লে যে দৃশ্যের সৃষ্টি হয় তা আসলে বলে বোঝাবার নয়, পুরোটাই অনুভবের বিষয়। এমন সৌন্দর্য দেখার লোভেই ময়মনসিংহের ত্রিশালের চেচুয়া বিলে ভিড় জমাচ্ছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের দর্শনার্থীরা।
ময়মনসিংহ শহর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ত্রিশাল উপজেলার রামপুর ইউনিয়নে ৫০ একর জমি বেষ্টিত বিশাল চেচুয়া বিল। এখন এটি শাপলা বিল নামেই পরিচিত। এ বিলে লাল, সাদা, হলুদ, বেগুনি রঙয়ের লাখো শাপলা দেখতে সূর্য উদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত মানুষের ঢল নামে। মানুষের আনাগোনায় বিলটি এখন অঘোষিত পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বিলে ঘুরে শাপলা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য নৌকারও ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে চেচুয়া বিল আলোচনায় আসে গত দুই বছর আগে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিল নিয়ে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। গুজব ছড়ানো হয় বিলের পানি ও মাটি সর্ব রোগের ওষুধ। এ গুজবে চেচুয়া বিলে নামে মানুষের ঢল। দেশের হাজার হাজার মানুষ কাদা মাখা পানিতে গোসল, গড়াগড়ি ও কাদাযুক্ত পানি সংগ্রহ করতে ভিড় জমান। এমন গুজবও ছড়ানো হয়েছিল বিলের পানিতে এক ডুবেই সেরে যাবে যেকোনও রোগ। ওই সময় স্থানীয় প্রশাসনের পদক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
কথা হয় চেচুয়া বিলে ময়মনসিংহ নগরী থেকে ঘুরতে আসা জাহাঙ্গীর-মমতাজ দম্পতির সঙ্গে। তারা জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনেকের কাছ থেকে শুনে শাপলার সৌন্দর্য দেখতে চেচুয়া বিলে এসেছেন। নৌকা দিয়ে পুরো বিল ঘুরে দেখে অনেক খুশি তারা। বিল সংলগ্ন এলাকাকে পর্যটন এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা যেতে পারে বলে জানান এই দম্পতি।
এদিকে বিলটিতে যেন সারা বছর শাপলা ফুল থাকে এ জন্য বিলের ফুল তোলা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।