শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে

বেতন না দেওয়ায় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ময়মনসিংহের সীমান্তবর্তী এলাকা হালুয়াঘাটের শাকুয়াই বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দৌলত আলীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।

ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী লিমা আক্তার মোবাইল ফোনে বলেন, ‘বেতন এবং পরীক্ষার অতিরিক্ত ফি বাবদ ৯ হাজার টাকা জমা না দেওয়ায় কলেজের অধ্যক্ষ দৌলত স্যার আমাদের গালমন্দ করে প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেন। অধ্যক্ষ স্যারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে কলেজের প্রভাষক আব্দুস সালাম স্যার শুধু গালমন্দই করেননি বরঞ্চ আমাদের মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে বলেছে, টাকা দিতে না পারলে বাড়িতে গিয়ে বাপ-মায়েরে বলিস বিয়ে দিয়ে দেওয়ার জন্য। আর ছেলেদেরকে বলেছে, লেখাপড়া ছেড়ে ঢাকায় চলে যা। চাকরি কর, না পারলে অটোরিকশা চালা। গরিব মানুষের লেখাপড়া করার দরকার নাই। এভাবেই আমাদেরকে অপমান করে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেওয়া হয়।’

শুধু লিমা আক্তারই নন, শাকুয়াই বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির প্রাক নির্বাচনি পরীক্ষার হল থেকে বেতন ও পরীক্ষা ফি বাবদ টাকা দিতে না পারায় ১৯ শিক্ষার্থীকে অপমান করে বের করে দেওয়া হয়। এসব অভিযোগ এনে বুধবার (৪ অক্টোবর) কলেজের উনিশ শিক্ষার্থী অধ্যক্ষ দৌলত আলী ও প্রভাষক আব্দুস সালামের বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি আবেদন করেন। 

ইউএনও বরাবর শিক্ষার্থীদের দেওয়া লিখিত অভিযোগ

শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘পরীক্ষার ফি এবং বেতন বাবদ কলেজ কর্তৃপক্ষ ৯ হাজার টাকা দাবি করে। আমরা গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান। এত টাকা জোগাড় করতে পারি নাই। তাই টাকা কমানোর জন্য আমরা শিক্ষার্থীরা বারবার অধ্যক্ষ স্যারের কাছে অনুরোধ করেছি। কিন্তু স্যার কোনও কথা না শুনে মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) পরীক্ষার হল থেকে আমাদেরকে বের করে দেন এবং গালমন্দ করে অশালীন কথা বলেন। এরই বিচার চেয়ে আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছি।’ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে বলেও জানায় এ শিক্ষার্থী।

অভিযোগ অস্বীকার করে অধ্যক্ষ দৌলত আলী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমরা কখনোই অশালীন আচরণ করতে পারি না। আর অতিরিক্ত ফি বা বেতন শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হচ্ছে না। তাদের কাছে বকেয়া বাবদ ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু টাকা না দিয়ে বাইরের কুচক্রী মহলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা অভিযোগ করেছে।’

অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত করার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’