সরিষাবাড়ীতে নৌকা ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষ, নির্বাচনি ক্যাম্প ভাঙচুর

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলা চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ১০ সমর্থক আহত হন। সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) রাতে তাড়িয়াপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) আসনে পৌরসভার শিমলাপল্লী তাড়িয়াপাড়া এলাকায় সোমবার সন্ধ্যায় ও রাতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাহবুবুর রহমান ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) ঈগল প্রতীকের প্রার্থী ডা. মুরাদ হাসানের নির্বাচনি প্রচারণা কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। এ সময় দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে অন্তত দশ জন আহত হয়েছেন।

নৌকার সমর্থকরা জানায়, সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের শিমলাপল্লী তাড়িয়াপাড়া এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের নির্বাচনি ক্যাম্পে সোমবার সন্ধ্যায় ও রাতে দুই দফা হামলা করে। এ সময় কার্যালয়ে বসে থাকা সমর্থক আব্দুল মান্নান ও শাকিল মিয়াকে পিটিয়ে আহত করা হয়। কার্যালয়ের চেয়ার ভাঙচুর করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ও নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর ছবি ছিঁড়ে ফেলা হয়।

নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে এ খবর পৌঁছালে তাড়িয়াপাড়া এলাকায় নির্বাচনি ক্যাম্পের সামনে তারা সমবেত হয়।

পরে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর অন্তত ১০ সমর্থক আহত হন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত সাদ্দাম (৩২), রোকন (২৮), কফিল (২৫), ফারুক (২৫), ফরহাদ (২২), রুবেল (৩০), হামজা (১৮) ও দিলখোশ মিয়াকে (৪০) রাত ৯টার দিকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার শিমলাপল্লী গ্রামের তাড়িয়াপাড়া এলাকায় কয়েক দিন আগে স্বতন্ত্র প্রার্থী (ঈগল প্রতীক) ডা. মুরাদ হাসান একটি নির্বাচনি ক্যাম্প নির্মাণ করেন। সোমবার রাত পৌনে আটটার দিকে তার কর্মী-সমর্থকরা ওই নির্বাচনি ক্যাম্পে যাচ্ছিলেন। ক্যাম্পের সামনে পৌঁছামাত্র আগে থেকে ওত পেতে থাকা নৌকা প্রতীকের কর্মী-সমর্থকরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়।

খবর পেয়ে সরিষাবাড়ী থানা পুলিশ ও র‌্যাব-১৪ এর একটি টহল দল ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় নৌকা ও ঈগল প্রতীকের প্রার্থীর পক্ষে সোমবার রাতেই পৃথকভাবে সরিষাবাড়ী থানায় অভিযোগ করা হয়।

জামালপুর -৪ সরিষাবাড়ী আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘ঈগল প্রতীকের প্রার্থী মুরাদ হাসানের সমর্থকরা আমার নির্বাচনি প্রচারণা ক্যাম্পে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এ সময় কয়েকজন কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। বঙ্গবন্ধু, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে।’

আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী (স্বতন্ত্র) ঈগল প্রতীকের প্রার্থী সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান বলেন, ‘নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকরা আমার নির্বাচনি ক্যাম্পের কয়েকটি চেয়ার ভাঙচুর করে। এ সময় ৪ থেকে ৫ জন কর্মীকে পিটিয়ে আহত করা হয়। আমার কোনও সমর্থক নৌকা প্রতীকের নির্বাচনি কার্যালয়ে হামলা করেনি।’

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই প্রার্থীর পক্ষে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তদন্ত করে মামলা নেওয়া হবে।’