নেত্রকোনায় দফায় দফায় সংঘর্ষ, আহত ৮৫

নেত্রকোনার খালিয়াজুরী ও কেন্দুয়া উপজেলার পৃথক দুই এলাকায় গ্রামবাসীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৮৫ জন আহত হয়েছেন।

বুধবার দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত খালিয়াজুরীর গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট (বড়হাটি) ও কেন্দুয়ার বলাইশিমুল ইউনিয়নের বলাইশিমুল-ছবিলা গ্রামে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খালিয়াজুরীর গাজীপুর ইউনিয়নের পাঁচহাট (বড়হাটি) গ্রামের একটি রাস্তায় কাজ করাকে কেন্দ্র করে আলী জাহান ও শরিফ মিয়ার লোকজন এবং পারভেজ মিয়ার লোকজনের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। এর জেরে আজ দুপুরে সংঘর্ষে জড়ান দুই পক্ষের লোকজন। দুই পক্ষের কয়েক শ লোক বল্লম, টেঁটা, ঢালসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে গ্রামের খোলা মাঠে সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৪৫ জন আহত হন। তাদের মধ্যে সালাম ও মোস্তাকিম নামের দুজনকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিরা খালিয়াজুরী, মোহনগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

খালিয়াজুরী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মকবুল হোসেন বলেন, ‌‘রাস্তায় কাজ করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কিছু লোক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।’

এদিকে কেন্দুয়া উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের বলাইশিমুল (দক্ষিণ পাড়া) গ্রামের তাহাজ্জত মিয়া ও ছবিলা গ্রামের এজহারুল মিয়ার মধ্যে ঈদের দিন বিকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে আজ দুপুরে দুই গ্রামবাসী মাইকিং করে জড়ো হয়ে দেশি অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। সংঘর্ষ দফায় দফায় বিকাল পর্যন্ত চলে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষ চলাকালে ছয়টি বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত আকাশ মিয়াকে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ছাড়া মুসলিম উদ্দিন, সাখাওয়াত হোসেন, সাইদুর রহমান, সফিকুল ইসলামসহ আটজনকে নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, ‘এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’