দেওয়ান বাজার নেত্রকোনা জেলার হাওরাঞ্চলের মদন উপজেলার ঐতিহ্যবাহী পশুর হাটের একটি। শত বছরের পুরোনো স্থায়ী এ পশুর হাটে সপ্তাহে প্রতি বৃহস্পতিবার শত শত গরু-ছাগল ক্রয়-বিক্রয় হয়। হাওরাঞ্চলের বেশ কয়েকটি উপজেলার মানুষসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্রেতা-বিক্রেতারা এখানে আসেন।
তবে ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পশুতে বাজারটি জমজমাট হয়ে উঠলেও ক্রেতা কম থাকায় দাম অনেকটাই কম।
বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত এ পশুর হাট ঘুরে দেখা গেছে, ছোট বড় ষাঁড়, গাভী ও ছাগলে বাজারটি জমজমাট থাকলেও ক্রেতা কম। তাই দামও কম। বেচাকেনাও কম। যে কারণে প্রত্যাশিত দাম না পেয়ে অনেকেই তাদের গরু ফেরত নিয়ে যান বাড়িতে।
তবে বিক্রেতাদের প্রত্যাশা, কোরবানির বেচাকেনা শুরু হলে দাম হয়তো বাড়বে।
বাজারে গরু কিনতে আসা আরমান বিন মকবুল বলেন, আমি প্রতি বছরই এই দেওয়ান বাজার থেকে গরু কিনি। এবারও কিনতে এসেছি। দাম কিছুটা কম থাকায় তিনটা ষাঁড় কিনেছি। আরও কিনবো। তবে কোরবানির ঈদের বেচাকেনা পুরোপুরি শুর হলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে।
ষাঁড় বিক্রি করতে আনা কৃষক বিল্লাল মিয়া বলেন, বাজারে ক্রেতা কম। তাই দামও কম। ভাবছিলাম, আমার গরুটা এক লাখ ৩০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবো। কিন্তু দাম হাঁকাচ্ছে মাত্র ৯০ হাজার টাকা। তাই ফেরত নিয়ে যাচ্ছি। দাম বাড়লে এবং প্রত্যাশিত দাম পেলেই গরু বিক্রি করবো।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরুল হক রনু বলেন, এই বাজারে হাওর এলাকার কৃষকরা তাদের গৃহপালিত গরু বিক্রি করতে আনেন। এখানে অনেক সাশ্রয়ী দামে গরু কেনা যায়। তাই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার ও ক্রেতারা ছুটে আসেন। সপ্তাহে শুধু বৃহস্পতিবার হাটটি বসলেও কোরবানির ঈদ উপলক্ষে সপ্তাহে দুই দিন অর্থাৎ বৃহস্পতি ও সোমবার হাট বসে।
বাজারটির প্রতিষ্ঠাতা দেওয়ান পরিবারের সদস্য মদন পৌর শহরের জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের বাসিন্দা সাবেক পৌর মেয়র মোদাচ্ছের হোসেন শফিক বলেন, হাওর এলাকার সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে কমপক্ষে শত বছর পূর্বে মগড়া নদীর তীর ঘেঁষে এই বাজার প্রতিষ্ঠা করেছিল দেওয়ান পরিবার। বর্তমানে জেলার মধ্যে আমাদের বাজারটি একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। বাজারে নামমাত্র টোল আদায় করা হয় স্থানীয় মসজিদের জন্য। এতে ক্রেতা-বিক্রেতারাও খুশি।