বগুড়ায় এবার শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে ৬১৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর সমপরিমাণ মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শেষ পর্যন্ড ৩টি মণ্ডপ কমতে পারে। এ উৎসবকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা কারিগররা। তারা দিন রাত কাজ করে কাদা মাটি, খড়-কাঠ আর সুতলি দিয়ে প্রতিমা তৈরি করেছেন। এখন চলছে তুলির শেষ আঁচড়ের কাজ। এবার ৩৭৬টি মণ্ডপকে ঝূঁকিপূর্ণ (গুরুত্বপূর্ণ) হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মণ্ডপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।
বগুড়া ডিআইও-১ অফিস সূত্র জানায়, এবার জেলার ১২ উপজেলায় ৬১৯ মণ্ডপে দূর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ১৬৬টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ (অধিক ঝূঁকিপূর্ণ), ২১০টি গুরুত্বপূর্ণ (ঝূঁকিপূণ) ও ২৪৩টি সাধারণ। বগুড়া সদরে ১০৩টি মণ্ডপের মধ্যে ২২টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ৩৬টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৪৫টি সাধারণ, শিবগঞ্জে ৪৩টি মণ্ডপের মধ্যে ১৩টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১৪টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ১৬টি সাধারণ, সোনাতলায় ৩৭টি মণ্ডপের মধ্যে ১৪টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১৮টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৫টি সাধারণ, গাবতলীতে ৭০টি মণ্ডপের মধ্যে ১০টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১৮টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৪২টি সাধারণ, সারিয়াকান্দিতে ২০টি মণ্ডপের মধ্যে ৩টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ৫টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ১২টি সাধারণ, কাহালুতে ৪০টি মণ্ডপের মধ্যে ১৬টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ২টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ২২টি সাধারণ, নন্দীগ্রামে ৫৩টি মণ্ডপের মধ্যে ১৬টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ৩৪টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৩টি সাধারণ, দুপচাঁচিয়ায় ৩৮টি মণ্ডপের মধ্যে ১৬টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১৩টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৯টি সাধারণ, আদমদীঘিতে ৬১টি মণ্ডপের মধ্যে ১৫টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১০টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৩৬টি সাধারণ, ধুনটে ২৭টি মণ্ডপের মধ্যে ৭টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ১২টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৮টি সাধারণ, শাজাহানপুরে ৪৭টি মণ্ডপের মধ্যে ১৫টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ২৫টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৭টি সাধারণ এবং শেরপুর উপজেলায় ৮০টি মণ্ডপের মধ্যে ১৯টি অধিক ঝূঁকিপূর্ণ, ২৩টি ঝূঁকিপূর্ণ এবং ৩৮টি সাধারণ। সূত্রটি আরও জানায়, শেষ পর্যন্ত ৩টি মণ্ডপ কমে ৬১৬টি হতে পারে।
এদিকে হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহত্তম এ উৎসব সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করতে প্রশাসনের পক্ষে ব্যাপক উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। গত রোববার পুলিশ সুপারের সভাকক্ষে পূজা উৎযাপন পরিষদের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল, সিনিয়র এএসপি গাজিউর রহমান, সিনিয়র এএসপি মশিউর রহমান মন্ডল, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার দেব, সাধারণ সম্পাদক সাগর কুমার রায়, সাবেক সভাপতি অমৃত লাল সাহা, সব উপজেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ১২ থানার ওসিরা উপস্থিত ছিলেন।
পুলিশ সুপার জানান, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে দুর্গোৎসব সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মণ্ডপগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি আনসার নিয়োজিত থাকবে। পূজার দিন শহরে বিকাল ৩টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ভারি যানবাহন প্রবেশ করতে পারবে না। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার দেব বলেন, বিজয়া দশমীর দিন সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে প্রতিমা বিসর্জন, আতশবাজি ও পটকা ফোটানো বন্ধ, মাদক সেবন থেকে বিরত, পূজা মণ্ডপে বিকল্প আলোর ব্যবস্থা, নিজস্ব স্বেচ্ছাসেব রাখা, আজানের সময় মাইক বন্ধ এবং সমর্থ অনুসারে মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে।
বগুড়ার সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) গাজিউর রহমান বলেন, প্রতি বছরের মত এবারও শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব পালন করতে পারেন সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
/এইচকে/