গ্রামের বাড়ি থেকে ১৬ বছর ধরে নিখোঁজ ছিল আব্দুর রহমান

আব্দুর রহমান

আশুলিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে বাড়ির পাঁচ তলা থেকে পড়ে নিহত জেএমবি প্রধান আব্দুর রহমানের প্রকৃত নাম সারোয়ার জাহান। গ্রামের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার দলদলি ইউনিয়নের নামো-মুশরীভূজা গ্রামে, নিশ্চিত করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানান, বরাবরই উগ্রবাদে বিশ্বাসী ছিল জেএমবির এই অর্থদাতা।

ভোলাহাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মহসিন আলী বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, গত ১৫/১৬ বছর ধরে সারোয়ার জাহান বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। জানা যায় ১৯৯৮ সালে নাচোলের একটি কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি হওয়ার পর থেকেই সে জঙ্গি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। ২০০৩ সালে জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলালে বাংলা ভায়ের নেতৃত্বে পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে তিনটি অস্ত্র লুটের ঘটনায় সম্পৃক্ততা ছিল তার। একই ঘটনায় ওই থানা পুলিশ তাসহ ৩৩ জনকে গ্রেফতার করে এবং সে ছিল ওই মামলার ৭ নম্বর আসামী। তবে, সারোয়ারের বিরুদ্ধে ভোলাহাট থানায় কোনও মামলা নেই। তার বাবা আব্দুল মান্নান পেশায় দর্জি এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

ওসি আরও জানান, গত তিন থেকে চারদিন আগে সারোয়ারের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য র‌্যাব ও পুলিশের একটি দল তার গ্রামের বাড়ি নামো-মুশরীভূজায় গিয়ে জেএমবি-সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্যাদি পায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়দের অনেকে জানান, সারোয়ার বরাবরই উগ্রবাদে বিশ্বাসী ছিল। শুক্রবার সকালে র‌্যাবের মহাপরিচালক ঢাকায় প্রেস ব্রিফিংকালে সারোয়ার জাহানের প্রকৃত ঠিকানা প্রকাশ করলে ভোলাহাট উপজেলার দলদলি ইউনিয়নের নামো-মুশরীভূজা গ্রামের বাড়িতে ভেড়ে জনতা। সারোয়ার গোপনে এলাকায় আসতো এবং তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।

দলদলি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাযহারুল ইসলাম পুতুল বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, র‌্যাবের অভিযানের সময় সাভারে এনাম মেডিক্যালে আহত সারোয়ার জাহানের চিকিৎসার খরচের জন্য সারোয়ারের বাবা চেয়ারম্যানের কাছে টাকা চাইলে তার বাবা জানান, অন্য ঘটনায় আহত হলে দশজনের কাছ থেকে টাকা জোগাড় করার চেষ্টা করতাম, কিন্তু জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা থাকায় এ ব্যাপারে সহযোগিতা করতে আমি অপরাগ।

শুক্রবার স্থানীয় মসজিদে জুম্মার নামাজের পর সারোয়ারের লাশ আনার জন্য তার বাবা মুসল্লিদের কাছে সাহায্য চাইলে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলেও জানান স্থানীয়রা।

/এইচকে/