বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, জেলার ১২টি উপজেলায় চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮৫ হাজার ৬৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের টার্গেট নির্ধারণ হয়েছিল। চাষ হয়েছে ১ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে উফসি জাত (ব্রিধান-৩৪, ব্রিধান-৪৯, স্বর্ণা ও রনজিত) ১ লাখ ৭৭ হাজার, হাইব্রিড (ধানীগোল্ড, হীরা, টিয়া ও ময়নাসহ বিভিন্ন জাতের) ২ হাজার হেক্টর এবং স্থানীয় জাত (গাইঞ্জা, খাটোবাদা, নাজিরশাইল) সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর।
গত মধ্য জুলাই থেকে রোপন শুরু ও মধ্য অক্টোবর থেকে কাটা-মাড়াই শুরু হয়েছে। চালের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছিল ৪ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৭ মেট্রিক টন। গত বছর প্রতি হেক্টরে ৩.১০ মেট্রিক টন ধানের ফলন পাওয়া গেলেও এবার ৩.২৫ মেট্রিক টন মিলছে। তাই চাল উৎপাদন ৬ লাখ মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ৬০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়ে গেছে বলেও কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার বগুড়ার সর্ববৃহৎ ধানের মোকাম নন্দীগ্রামের রনবাঘা, কাহালু, দুপচাঁচিয়া ও আদমদীঘি উপজেলায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রমিক মজুরি বেশি হওয়া সত্ত্বেও রোপা আমন ধান কাটা অর্ধেকের বেশি হয়ে গেছে। হাট-বাজারে ধান বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন জাতের ধান ৭৫০ টাকা থেকে ৯৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে স্বর্ণা-৫ (আগুর রনজিত) ৭৫০ থেকে ৭৬০ টাকা, মামুন স্বর্ণা ৭৮০ টাকা, ব্রি-৪৯ ৮৩০ টাকা, সম্পা নাজির ৮৫০ টাকা ও লাল পাইজাম ৯৫০ টাকা। গত বছর এ সময় রোপা আমন ধানের মূল্য ছিল ৬৫০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা মণ।
কাহালুর দূর্গাপুর গ্রামের কৃষক আহমেদ আলী, দুপচাঁচিয়ার জিয়ানগরের কৃষক মোফাজ্জল হোসেন, নন্দীগ্রামের রনবাঘার কৃষ সেকেন্দার আলী, বগুড়া সদরের শেখেরকোলা গ্রামের কৃষক ধলু মিয়া প্রমুখ জানান, তাদের অনেকের জমির ধান অর্ধেকের বেশি কাটা হয়ে গেছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে, সার, বীজ ও সেচের সংকট না থাকায় ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। হাট-বাজারে বিক্রি করে ভালো মূল্য পাওয়ায় তারা সন্তুষ্ট। তবে বাজার পড়ে গেলে কিছুটা লোকসান হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দুপচাঁচিয়া উপজেলার নওশীন রাইস মিলের মালিক আবু কালাম আজাদ বলেন, ‘বর্তমানে হাট-বাজারে রোপা আমন ধানের দাম বেশ চড়া যাচ্ছে। এ অবস্থায় মিল চালানো সম্ভব নয়।’ তিনি আশা করছেন, কাটার মৌসুম শেষ হলেই ধানের দাম কমে যাবে।
বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, নতুন ধান বাজারে উঠলে দাম কিছুটা বেশি হয়। বর্তমানে বাজার দর বেশি বলা যাবে না। তবে ধান কাটা শেষ হলে আগামী সপ্তাহে বাজার দর কমে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।
আরও পড়ুন-
দলের সমর্থন পেতে জেলা আ. লীগ নেতাদের দৌড়ঝাঁপ
/এফএস/