‘রাউধার ডায়েরির সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না’

Rajshahi RaudhaÆs body second autopsy News 24. 04 (4)ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের ছাত্রী ও মালদ্বীপের নাগরিক রাউধা আথিফের বাবা ডা. মোহাম্মদ আথিফ বলেছেন, ‘ছয় বছর থেকে আমার মেয়ে রাউধা ডায়েরি ব্যবহার করে। কিন্তু তাকে হত্যার পর থেকে সেই ডায়েরি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। রাউধা ডায়েরিতে প্রতিদিন যা ঘটতো তা লিখে রাখতো। এমনকি কল্পনায় যা আসতো তাও লিখে রাখতো। বারবার বলার পরও ডায়েরির ব্যাপারে কোনও তথ্য দিতে পারছে না পুলিশ।’

সোমবার (২৪ এপ্রিল) সকার সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর হেতেম খাঁ কবরস্থান থেকে পুনঃময়নাতদন্তের জন্য রাউধার লাশ উত্তোলনের পর তার বাবা মোহাম্মদ আথিফ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এই ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক আসমাউল হক বলেন, ‘ রাউধার ব্যবহৃত ল্যাপটপ, মোবাইলসহ অনেক কিছু জব্দ করা হয়েছে। সে তালিকায় তার ডায়েরি রয়েছে কিনা বলতে পারবো না। তবে এখন ( সোমবার বিকাল সাড়ে ৩টা) আমি অফিসের বাইরে রয়েছি। আগামীকাল (মঙ্গলবার) তালিকা দেখে বলতে পারবো।’

মোহাম্মদ আথিফ তার মেয়ে রাউধার স্মৃতিমন্থর করতে গিয়ে বলেন, ‘আমি যখন মেডিক্যালের ফাইনাল ইয়ারের ছাত্র, তখন সে (রাউধা) ছয় বছর বয়সে আমার মেডিক্যালের বই পড়তো। ছোটবেলা থেকে তার ডাক্তার হওয়ার সখ ছিল। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন দেশের ভাষার প্রতিও সে ভালো দক্ষ ছিল। রাউধা মডেলিং করার কারণে জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াতেও জনপ্রিয় ছিল। তার মৃত্যুর খবর কাভারেজ করার জন্য অস্ট্রেলিয়ার একজন সাংবাদিক আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে।’

মোহাম্মদ আথিফ আরও বলেন, ‘আমার মেয়ে (রাউধা) মরেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে। আমি শুধু রাউধার বাবাই নয়, আমি একজন ডাক্তারও। আমি রাউধার গলায় ফাঁসের চিহ্ন দেখতে পাইনি। দেখতে পেয়েছি তার গলায় হাতের চিহ্ন। তার গলায় কোনও ঝুলানোর চিহ্ন ছিল না। যারা মেডিক্যালে পড়াশোনা করে তারা জানে যে, কেউ আত্মহত্যা করলে তাকে ছোয়া (নামানো) যাবে না। আমার মেয়েকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পরে ওই মেডিক্যাল কলেজ ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নানা নাটকের জন্ম দিয়েছে। তবে বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ তদন্ত করছে, আমার আশা এবার রাউধার মৃত্যুর সঠিক কারণ উঠে আসবে।’

উল্লেখ্য, গত ২৯ মার্চ দুপুরে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রী হোস্টেলের ২০৯ নম্বর কক্ষ থেকে রাউধার লাশ উদ্ধারের পর ৩১ মার্চ মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের মাধ্যমে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ওই প্রতিবেদনে রাউধা আত্মহত্যা করেছেন বলে উল্লেখ করে মেডিক্যাল বোর্ড। পরে গত ১১ এপ্রিল রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় রাজশাহীর ইসলামী ব্যাংক মেডিক্যাল কলেজের পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা আত্মহত্যা করেছে বলেই তাদের মনে হয়েছে।

রাউধার মৃত্যুর ১২ দিন পর গত ১০ এপ্রিল তার সহপাঠী সিরাতকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আথিফ। রাজশাহীর আদালতে দায়ের করা ওই মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। সেই অনুযায়ী হত্যা মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। এরপর মামলাটি সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা অপমৃত্যুর মামলার তদন্তের ভারও দেওয়া হয় সিআইডিকে। বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) থেকে মামলা দুইটি তদন্ত শুরু করে সিআইডি।

আরও পড়ুন:  ফের ময়না তদন্ত রাউধার, মন্তব্য করেনি মেডিক্যাল টিম
/এআর/