‘আবুর স্ত্রী সহজ-সরল, সে জঙ্গি হতে পারে না’

‘আমার কাছে আবু যখন ছিল তখন সে খারাপ ছিল না। শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার ছেলেকে খারাপ পথে নিয়ে গেছে।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবনগর এলাকায় নিহত জঙ্গি আবুল কালাম আজাদ ওরফে আবুর মায়ের এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার শ্বশুরবাড়ি এলাকার লোকজন। তাদের দাবি, আবুর স্ত্রী সহজ-সরল, সে জঙ্গি হতে পারে না। আর তার শ্বশুর কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে, জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই ওঠে না।

আবুর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি কাউকেইশুক্রবার দুপুরে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট ইউনিয়নের শিবনগর কাইঠাপাড়া এলাকায় আবুর শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে কথা হয় আবুর স্ত্রী সুমাইয়া ওরফে রেখার চাচা সাদিকুল ইসলামের সঙ্গে।

রেখার চাচা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমাদের মেয়ে সহজ-সরল প্রকৃতির। জামাই আবু যে ভেতরে ভেতরে এধরনের কাজের সঙ্গে জড়িত ছিল, আমরা তা জানতাম না। শিবনগরের পুলিশি অভিযানে আমাদের মেয়ে ও নাতনিকে জীবিত পাওয়া গেছে। আবার অনেকে বলছে আবুসহ চারজন মারা গেছে। তা আমরা এখনও জানি না। কারণ জামাই আবুর লাশ তো আমি দেখিনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেখা অসুস্থ থাকার কারণে শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তেমন কাজকর্ম করতে পারতো না। এজন্য তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে পছন্দ করতো না। এই কারণে আমাদের মেয়ে এখানেই বেশি থাকতো। আর আমাদের মেয়ে প্রায়ই অসুস্থ থাকায় আমরা জামাইকে (আবু) একটু বেশি ভালোবাসতাম। তাই আবুও আমাদের সঙ্গে চলাফেরা বেশি করতো।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সুমাইয়া ওরফে রেখার বাপের বাড়ির কয়েকজন নারী প্রতিবেশী জানান, ‘সে (রেখা) ছিল পাগলি টাইপের একটি মেয়ে। সে কখনও জঙ্গি লাইনে যেতে পারে না। ধর্মের ব্যাপারে তাকে বাড়াবাড়ি ধরনের কোনও কথা কোনদিন বলতে শুনেনি। প্রায় সময়ই সে অসুস্থ থাকতো। এমনকি পাঁচ-সাত জনের জন্য খাবার তৈরি করতে বললেও তার সে ক্ষমতা ছিল না।’

তারা আরও জানান, আবুর শ্বশুরবাড়ির লোকজন ভয়ে, আতঙ্কে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

জানা যায়, শিবগঞ্জ উপজেলায় আবুর বাপের থেকে রেখার বাপের বাড়ির দূরুত্ব প্রায় ৭ কিলোমিটার। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বক্তব্য, আবুর ছেলে হিসেবে খুব ভালো ছিল। কাউকে আঘাত দিয়ে কোনও কথা বলতো না। শ্বশুরবাড়িতে থাকলেও আবু যা আয় করতো তার বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দিতো। অপরদিকে, আবুর পরিবারের দাবি, আবু যা আয় করতো তা শ্বশুরবাড়িতেই খরচ করতো।

প্রসঙ্গত, জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার হওয়ার আবুর স্ত্রী সুমাইয়া ওরফে রেখা পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের একটি সূত্র জানায়, ঈগল হান্ট অপারেশনের সময় বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় জঙ্গি আবুর স্ত্রী সুমাইয়াকে উদ্ধার করা হয়। বর্তমানে তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে রাখা হয়েছে।

/এমও/