জটিলতা কাটিয়ে রাজশাহীর আম যাচ্ছে বিদেশে

Rajshahi-Mango-Photo-11জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে রাজশাহীর আম রফতানির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। রবিবার (১১ জুন) রাজশাহী থেকে সাড়ে তিন হাজার কেজি আম ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ইউরোপে রফতানির জন্য। তবে কোম্পানি দেরিতে আম নেওয়ায় ও অতিরিক্ত পরিপক্ক হওয়ায় ব্যাগেই পেকেছে অনেক আম। আর এসব আম রফতানি না হওয়ায় স্থানীয় চাষিরা লোকসানের মুখে পড়েছে।

জানা গেছে, স্থানীয় বাগান থেকে প্রথমে এসব আম আর আর (রাজীব) ইন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ঢাকায় যাবে। সেখান থেকে আর আর ইন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আল-আমিন হোলসেলস লিমিটেড সরবরাহ নেবে। রাজীব এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে আম রফতানির লক্ষমাত্রা ছিল প্রায় দুই হাজার টন। কিন্তু আমের অর্ডার দেরিতে হওয়ায় এমনিতেই একশ’ টন আম সরবরাহের সময় পার হয়ে গেছে।Rajshahi-Mango-Photo-12

রাজশাহী এগ্রো ফুড প্রোডিউসার সোসাইটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইউরোপে পাঠানোর জন্য বিভিন্ন এলাকার ১০টি বাগান থেকে আম সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২৮ সে থেকে এই আমগুলো নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কোম্পানি দেরিতে নেওয়ায় অনেক আম প্যাকেটেই পেকে গেছে। আবার অতিরিক্ত পরিপক্ক হওয়ায় আম বোটা থেকে ঝরে প্যাকেটেই রয়ে গেছে। এমন শতকরা প্রায় ৩০টি আম রফতানির বাইরে থাকছে। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘হিমসাগর (ক্ষিরসাপাত) আম প্যাকেটজাত করা হচ্ছে। প্রতিটি প্যাকেটে দুই কেজি আম সংরক্ষণ করা হচ্ছে। গত বছর প্রতি কেজি আমের দাম ৮৫ টাকা দিলেও এবারে দিচ্ছেন ৮০ টাকা। এখানেও চাষিকেও লোকসান গুণতে হচ্ছে।’

সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুর রহমান খান বলেন, ‘রাজশাহীতে প্রায় একশ’ চাষি বিদেশে রফতানির যোগ্য আম চাষ করেছেন। প্রায় ১০ লাখ আম ব্যাগিং করা হয়েছে। তবে প্রতিকূল পরিবেশ, এক্সপোর্ট-ইম্পোর্টের জটিলতার কারণে কিছুটা হলেও লোকসান হবে।’Rajshahi-Mango-Photo-158

এদিকে রাজশাহীতে এবারে ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতিতে আমচাষ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। উৎপাদিত আমের গুণগত মান ভালো হওয়ায় এসব আম বিদেশে রফতানি হচ্ছে। আমের মান ও দাম ভাল পাওয়ায় ক্রমেই উৎসাহী হয়ে উঠছেন কৃষকরা। ফলে এই ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতির মাধ্যমে আম চাষের প্রসার ঘটেছে। কৃষকরা লাভবান হওয়ার জন্য বালাইমুক্ত নিরাপদ আম উৎপাদন করতে বাগানে ব্যবহৃত ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহার করছে। সুস্বাদু ও গুণগত মান ভালো হওয়ায় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখানকার আম রফতানি হচ্ছে চিন ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক দেব দুলাল ঢালী বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে বিদেশে আম রফতানির পর অর্ধেক বাদ হয়ে যায়। এতে করে রফতানিকারকরা বিদেশে বাজার যাতে নষ্ট না হয় সেজন্য হিসাব-নিকাশ করে এবার আম কেনা হয়েছিল। এতে করে আম নিতে রফতানি কারকদের দেরি হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছে। কারণ বিদেশে বাংলাদেশের আমের বাজার নষ্ট হলে প্রতিবেশী দেশ ভারত ও পাকিস্তান এ স্থান দখল করবে।’

/এআর/