আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত

নওগাঁয় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত (ছবি প্রতিনিধি)নওগাঁয় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গত চার দিনে আত্রাই নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে গেছে। ইতিমধ্যে মান্দায় ৬টি,রানীনগরে ৫টি, আত্রাইয়ে ২টি ও পত্নীতলায় ১টি বাঁধ ভেঙে গেছে। বন্যার পানিতে জেলার রাণীনগর, আত্রাই, মান্দা, পত্নীতলা, বদলগাছী ও ধামইরহাট উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় এক লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আত্রাই নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বিভিন্ন উপজেলায় নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০টি পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

এছাড়া ছোট যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে নওগাঁ শহর রক্ষা বাঁধ উপচে এবং বাঁধের আউটলেট (নদী থেকে পানি বের করে দেওয়ার নালা) দিয়ে নওগাঁ শহরের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

নওগাঁয় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত (ছবি প্রতিনিধি)নওগাঁ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, গত চারদিনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তীর সংরক্ষণ বাঁধের ১৪টি স্থান ভেঙে যায়। মান্দা উপজেলার বুড়িদহ সুজনসখির ঘাট, শহরবাড়ী, চকবালু, কয়লাবাড়ি,দারিয়াপুর, চকরামপুর পার নুরুল্যাবাদ, নুরুল্যাবাদ উত্তরপাড়া ও কয়াপাড়া কলেজমোড় এলাকায় আত্রাই নদীর বাঁধ ভেঙে উপজেলার প্রসাদপুর, নুরুল্যাবাদ,মান্দা সদর, বিষ্ণুপুর, কশব, পরানপুর, কালিকাপুর ও তেতুলিয়া ইউনিয়নের বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের বাস ভবনেও পানি (ছবি: প্রতিনিধি)বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় পরিবারগুলো বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে। বন্যার কারণে এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।  এছাড়া গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার কারণে গরু ছাগলকে কোথাও বের করতে পারছে না। এদিকে ফসলের ক্ষেত ডুবে যাওয়ায় কৃষকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। জেলার ৫টি উপজেলায় প্রায় ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। বন্যার কারণে কেউ যদি স্কুলে আশ্রয় নিতে চায় সেজন্য জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষকে অনুমতি দেওয়া আছে।

জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলার মহাদেবপুর, আত্রাই, রাণীনগর ও মান্দা উপজেলায় প্রায় ৮০০ পুকুর ডুবে গেছে। ফলে মাছ চাষিদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মনোজিত কুমার মল্লিক বলেন,জেলায় রোপা ও আমন ২৩ হাজার ৭০০ হেক্টর, আউশ ৫ হাজার এবং সবজি ৫০০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে।

বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে মানুষনওগাঁ জেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা একেএম আব্দুল মান্নান বলেন, প্রায় এক লাখ লোক পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দিদের তালিকা তৈরি হচ্ছে বলে তিনি জানান।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক ড. আমিনুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩৩ মেট্রিক টন চাল ও নগদ পাঁচ লাখ টাকা অনুদান পাওয়া গেছে। যা বিতরণ শুরু হয়েছে।

/বিএল/

আরও পড়ুন:
গাইবান্ধায় বন্যা কবলিত এলাকায় বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট