চার দিনে ১৫৯টি আমের চারা নষ্ট, বাগান নিয়ে উদ্বেগে চাষিরা

চার দিনে ১৫৯টি আমের চারা নষ্ট (ছবি: নাটোর প্রতিনিধি)মাত্র চার দিনের ব্যবধানে আট জন কৃষকের পৃথক বাগানে ছয় থেকে ১০ বছর বয়সী ১৫৯টি আমের চারা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। রাতের আঁধারে গাছগুলো কেটে ফেলা হয়েছে ও ডালপালা ভেঙে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় উদ্বেগে রয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার কৃষকরা।

ধ্বংস করা গাছগুলোর মধ্যে ফজলি,আম্রপালি ও গোপালভোগ আমের চারা রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব চারাগাছ থেকে দুই থেকে তিনবার আম বিক্রিও করেছেন কৃষকরা। তাদের অভিযোগ, রাতের আঁধারে এসব চারাগাছ কেটে ফেলায় দুর্বৃত্তদের ধরা যাচ্ছে না। কৃষি বিভাগ বা প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও ফল হচ্ছে না। তবে পুলিশ বলছে, লিখিত অভিযোগ পেলে দোষীদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।  

বাগাতিপাড়া উপজেলার চকগোয়াশ গ্রামের আম চাষি ইউনুস আলী, আকবর হোসেন, রুস্তম আলী ও কাজেম আলী দাবি করেন, ধানসহ অন্যান্য ফসল আবাদ করে তেমন লাভ না হওয়ায় সম্প্রতি তারা আমবাগান করতে উদ্বুদ্ধ হন। অনেক টাকা খরচ করে এবং প্রায় ১০ বছর ধরে অনেক পরিশ্রম করে তারা আমের চারাগুলো বড় করে তুলেছেন। চারাগুলো থেকে গত দুই-তিন মৌসুমে তারা প্রচুর আমও বিক্রি করেছেন।চার দিনে ১৫৯টি আমের চারা নষ্ট (ছবি: নাটোর প্রতিনিধি)

মঙ্গলবার বিকালে তারা খবর পেয়ে আম বাগানে গিয়ে দেখেন তাদের সাত থেকে দশ বছর বয়সী মোট ৯৪টি আম গাছের চারা কেটে ফেলা হয়েছে ও বাকিগুলোর গোড়ার দিকের ছাল ধারালো অস্ত্র দিয়ে তুলে ফেলা হয়েছে। গোড়ার ছাল ওঠা গাছগুলো দ্রুত নুয়ে ভেঙে পড়ছে।

অপরদিকে পাশেই তকিনগর গ্রামের আম চাষি তনু, টেনু, ঝড়ু জিল্লাল দাবি করেন, গত শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকালে খবর  পেয়ে তারা তাদের বাগানে ছুটে গিয়ে দেখেন, দুর্বৃত্তরা তাদের মোট ৬৫টি চারাগাছ একই কায়দায় ধ্বংস করেছে। চারা গাছগুলো পাঁচ থেকে ছয় বছর বয়সী ছিল। গত দুই বছর তারা বাগানের আম বিক্রি করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, এর আগেও বেশ কয়েকবার এমন ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু প্রশাসন বা কৃষি বিভাগকে জানিয়ে তারা কোনও ফল পাননি। তাই এবার আর তাদের জানাতে চান না।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোমরেজ আলী কৃষকদের দাবির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এরকম ঘটনায় তাদের বিভাগের তেমন কিছু করার থাকে না। কৃষকদের নিজ বা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্থানীয়ভাবে সচেতন থাকলেই কেবল এটা বন্ধ করা সম্ভব। তিনি সংশ্লিষ্ট কৃষকদের এব্যাপারে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাসরিন বানু জানান, বিষয়টি তিনি লোকমুখে শুনেছেন। কৃষকদের তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করার পরামর্শ দেন।

বাগাতিপাড়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এঘটনায় এখনও পর্যন্ত কেউ কোনও অভিযোগ জমা দেয়নি। অভিযোগ পেলে দোষীদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনতে তাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা থাকবে।

আরও পড়ুন- নড়াইলে আমন ধানে পোকার আক্রমণ, দিশেহারা কৃষক