সিরাজগঞ্জে বাসে অগ্নিসংযোগ-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা





সিরাজগঞ্জে বাসে অগ্নিসংযোগসিরাজগঞ্জ-বেলকুচি রুটে চলাচলকারী হেমা পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ৭-৮টি বাস ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। হেমা পরিবহনের মালিক হাসানুর ইসলাম বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে মামলাটি করেন। মামলায় জেলা ছাত্রলীগের সাময়িক বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি বেলকুচির খাসমেটুয়ানী গ্রামের রিয়াদ হোসেন ও তার সহযোগী চরচালা গ্রামের আরমান আলীসহ অজ্ঞাত আরও ১৫-১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। বেলকুচি থানার ওসি সাজ্জাদ হোসেন জানান, দ্রুত বিচার আইনের ধারায় মামলা করা হয়েছে।

অন্যদিকে, বেলকুচি পৌরসভা ভাঙচুর ও মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাসকে লাঞ্ছিতের ঘটনায় ডিবি পুলিশের হাতে গ্রেফতার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল হক রেজা ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস.এম. ওমর ফারুক সরকারকে শুক্রবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কোর্ট পরিদর্শক বাবুল উদ্দিন সরদার ও কারা তত্ত্বাবধায়ক আল মামুন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সকাল থেকে শুরু হওয়ো সিরাজগঞ্জ-বেলকুচি-এনায়েতপুর রুটে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন (বাস) ধর্মঘট চলছে। শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে ধর্মঘট শুরু হয়েছে। জেলা বাস মালিক সমিতি ও পরিবহন শ্রমিক নেতারা বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) রাতে সমিতির কার্যালয়ে জরুরি যৌথসভায় এ ধর্মঘটের ডাক দেন।



জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলহাদি আলমাজি জিন্নাহ শুক্রবার রাত ১০টায় বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকালে ডিবি পুলিশ বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা এবং উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এস.এম. ওমর ফারুক সরকারকে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় তাদের অনুসারীরা বেলকুচি থানা পুলিশের সামনেই সিরাজগঞ্জ-বেলকুচি রুটে চলাচলকারী হেমা পরিবহনের একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। ৭-৮টি বাস ভাঙচুর করে। এ ঘটনার প্রতিবাদে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতারা আইনগত পদক্ষেপ নিতে ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে ওই রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দেন।’

এদিকে বেলকুচিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদে ও ধর্মঘটের সমর্থনে পরিবহন নেতাদের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে জেলা শহরে মাইকিংও করা হয়।

বাস ধর্মঘটগত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজার নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী বেলকুচি পৌরসভায় সভা চলার সময়ে সভাকক্ষের দরজায় লাথি মেরে ভেতরে প্রবেশ করে। বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ ও ইজারার ভাগবাটোয়ারাসহ কর্মচারী নিয়োগের বাণিজ্যের কথা উত্থাপন করে পিস্তল ধরে মেয়রের কাছে যুবলীগ নেতা রেজা ও সহযোগীরা ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় মেয়র বেগম আশানুর বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করেন তারা। ওই দিন সন্ধ্যায় দ্রুত বিচার আইনের ধারায় মেয়র বেলকুচি থানায় মামলা জমা দিলেও ওসি সাজ্জাদ হোসেন মামলা রেকর্ড করেননি। ২৪ ডিসেম্বর দ্রুত বিচার আইনের ধারা সংযোজন করে মেয়র সিরাজগঞ্জ আমলী আদালতে অভিযোগ করেন। ঘটনার দিন রাতে বেলকুচি থানায় রেকর্ডকৃত চাঁদাবাজির মামলার সঙ্গে দ্রুত বিচারের ধারা সংযোজন করে তদন্তভার বেলকুচি থানা পুলিশের পরিবর্তে ডিবি পুলিশকে হস্তান্তরের নির্দেশ দেন বিচারক। দ্রুত বিচার আইনের ধারা সংযোজনের রেকর্ডকৃত মামলায় বেলকুচি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুল হক রেজা, যুগ্ম আহ্বায়ক এস.এম. ওমর ফারুক সরকার ও জেলা ছাত্রলীগের সদ্য সাময়িক বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি রিয়াদ হোসেন ও অজ্ঞাত আরও ১৫ জনসহ ৩০-৩৫ জনকে আসামি করা হয়। ওই ঘটনায় শুক্রবার বিকালে সাজ্জাদুল হক রেজা এবং এস.এম.ওমর ফারুক সরকারকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেফতারের পর পরই রেজা ও ফারুকের সমর্থকরা বেলকুচিতে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরসহ তাণ্ডব চালায়।