আষাঢ়েও দেখা নেই বৃষ্টির, গরমে বিপর্যস্ত রাজশাহীর জনজীবন

গরম থেকে বাঁচতে স্বস্তির আশায় পদ্মা নদীর তীরে লোকজন আষাঢ় মাসের চার দিন অতিবাহিত হলেও রাজশাহীতে বৃষ্টির দেখা নেই। আকাশে মেঘের আনাগোনা পর্যন্ত নেই। ফলে বেড়েছে বাতাসের আর্দ্রতা। এতে বাড়ছে তাপমাত্রা। গরমে অতিষ্ট জনজীবন। একটু স্বস্তির আশায় বৃষ্টির অপেক্ষায় রাজশাহীর লোকজন।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, ১৫ জুন রাজশাহীর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সোমবার (১৮ জুন) তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৪ ডিগ্রি। বাতাসের আর্দ্রতা সন্ধ্যায় ৬টায় রেকর্ড করা হয়েছে ৭০ শতাংশ। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় রাজশাহী অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। তবে আশার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। শিগগিরই বৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছে তারা।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুস সালাম বলেন, ‘বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজশাহী অঞ্চলের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। কয়েক সপ্তাহ থেকে রাজশাহী অঞ্চলে প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হচ্ছে না। ফলে তাপদাহের পরিমাণটা কমছে না। আর আমাদের এখানে যে পরিমাণ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে তার চেয়েও বেশি তাপমাত্রা রাজশাহী নগরীর অন্য এলাকায়। কারণ যে যন্ত্রটা এখানে বসানো আছে সেখানে সূর্যের আলো সরাসরি পায় না। এতে করে অফিসের ৪০ ডিগ্রি হলে নগরীর অন্য এলাকায় খোলা আকাশের নিচে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস হবে।’

গরম থেকে বাঁচতে স্বস্তির আশায় পদ্মা নদীর তীরে লোকজন গরমের কারণে ঈদের আনন্দ ভালোভাবে করতে পারেনি অনেকে। ভ্যাপসা গরমের কারণে অনেক ঈদের নতুন পোশাক পর্যন্ত পরেনি। নগরীর বহরামপুর এলাকার কাওসার আহমেদ বলেন, ‘আষাঢ় মাস শুরু হয়ে গেছে। কিন্তু বৃষ্টির দেখা নেই। গরমের কারণে মেজাজটা কেমন জানি খিটখিটে হয়ে থাকছে। দরকার এখন স্বস্তির বৃষ্টি।’

নগরীর রানীনগর এলাকার মহ্মুদা আক্তার সন্ধ্যা বলেন, ‘গরমের কারণে এবার ঈদে তেমন ঘোরাঘুরি করতে পারেনি। বাতাসের আশায় নদীর ধারে বেড়াতে গিয়ে দেখি বালু তেতে আছে। ফলে গরম আরও বেশি সেখানে। নদীর ধারে গিয়েই তাই শান্তি পায়নি।’

শুধু শহর নয়, রাজশাহীর অন্য এলাকায় একই অবস্থা। তাপদাহের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা স্থবির হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ বেড়েছে। নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি-কাশিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গরমের কারণে বিবর্ণ হয়ে গেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ।