আগামী ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। আর এই নির্বাচনকে ঘিরে চলছে প্রার্থীদের প্রস্তুতি। প্রচারণার জন্য আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছেন প্রার্থীরা। দলীয় প্রতীকপ্রাপ্ত প্রার্থীরা আগাম প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছেন। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই যাতে গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারেন, সেই বিবেচনায় পোস্টার ও লিফলেট ছাপাচ্ছেন। এতে করে চাপ বেড়েছে ছাপাখানাগুলোতে। তবে কোনও কোনও ছাপাখানা অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার স্বেচ্ছায় দূরে আছে নির্বাচনি প্রচারণার উপকরণ ছাপানোর কাজ থেকে। এমন প্রেসও আছে, গত নির্বাচনে পোস্টার-লিফলেট ছাপানো বাবদ পাওনা অর্থ যাদের হাতে এখনও যায়নি।
দীর্ঘদিন ধরে পোস্টার ও লিফলেট তৈরির কাজ করছে রাজশাহীর স্বাগতম প্রেস। স্বাগতম প্রেসের কর্ণধার স্বাগতম নস্কর জানিয়েছেন, ‘রাজশাহী-১ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী, রাজশাহী সদর আসনের মহাজোট প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশা, রাজশাহী-৩ আসনে আওয়ামী লীগের আয়েন উদ্দিন এবং রাজশাহীর-৪ আসনে বিএনপির আবু হেনা আমার কাছে পোস্টার ও লিফলেট ছাপাতে দিয়েছেন। সেই অনুযায়ী কাজ করছি। তবে তারা শুধু আমার এখানেই যে কাজ করতে দিয়েছেন তা নয়। নগরীর অন্য প্রেসেও কাজ করাচ্ছেন।’
নগরীর শহীদ কামারুজ্জামান চত্বর সংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত বিকল্প প্রেসের মালিক ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নওশের আলী জানান, ইতোমধ্যে সদর আসনে মহাজোটের প্রার্থী ফজলে হোসেন বাদশার ৫০ হাজার পোস্টার ছাপানোর কাজ শেষ হয়ে গেছে।
নগরীর ভাই ভাই অফসেট প্রেসের কর্মচারী জাহাঙ্গীর আলম ও সাইফুল ইসলাম জানান, ‘আমাদের এখানে রাজশাহী-৫ আসনের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ডা. মনসুর রহমানের দুই লাখ পোস্টার ছাপানো হয়ে গেছে। এখন রাজশাহী সদর আসনের ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী মিজানুর রহমান মিনু ৮ লাখ লিফলেট ছাপানোর কাজ চলছে। রাতদিন সমান করে আমাদের কাজ করতে হচ্ছে। কারণ অন্য প্রার্থীদের কাজ করার সুযোগ থাকে।
রাজশাহীর নগরীর নিউমার্কেট এলাকায় অবস্থিত রংধুন প্রেসের মালিক তাজুল ইসলামের ভাষ্য, ‘এবারও পোস্টার ছাপানোর কাজ পেয়েছিলাম। অর্ডার নেইনি। কারণ অনেক প্রার্থী আছেন যারা পোস্টার-ব্যানার ছাপানোর অর্ডার দেন। অথচ টাকা দেওয়ার সময় টাকা দেন না। গতবার নির্বাচনের সময় এক প্রার্থীর পোস্টার-ব্যানার ছাপিয়ে দিয়েছিলাম। এখনও ৭৫ হাজার টাকা পাই। অথচ দেননি। নতুন করে আবার পোস্টার ব্যানার তৈরির কথা বলছেন। আমি সাফ জানিয়ে দিয়েছি, আমি নির্বাচনের পোস্টার-ব্যানার তৈরির কাজ করছি না।’
প্রতীক বরাদ্দের আগে আগাম পোস্টার ও লিফলেট ছাপানোর বিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম জানান, ‘প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনি প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন। এর আগে কেউ প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবে না। দলীয় প্রতীকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই অনেক প্রার্থী নিশ্চিত হওয়ার পর পোস্টার-লিফলেট ছাপানোর কাজ সেরে রাখছেন। তবে তারা সেগুলো প্রতীক বরাদ্দের আগে কোথায় প্রদর্শন করতে পারবে না।’