ব্যাংকের অর্থ আত্মসাৎ, চার্জশিটে নারী কর্মকর্তাসহ ৭ অভিযুক্ত

Untitled-1বগুড়ায় রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখায় গ্রাহকের নামে ভুয়া ঋণ উত্তোলন দেখিয়ে দুই কোটি ৬০ লাখ টাকা আত্মসাৎের মামলায় ওই শাখার সাবেক ব্যবস্থাপকসহ সাত জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, যাদের একজন নারী কর্মকর্তা। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বগুড়া সমন্বিত কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক রবীন্দ্রনাথ চাকী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তিনি তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 
চার্জশিটে অভিযুক্তরা হলেন রূপালী ব্যাংক বগুড়ার মহাস্থানগড় শাখার সাবেক ব্যবস্থাপক (সাময়িক বরখাস্ত) জোবায়নুর রহমান, সাবেক সিনিয়র অফিসার (বগুড়ার মোকামতলা শাখায় কর্মরত) ইশরাত জাহান, সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার (জয়পুরহাট শাখায় কর্মরত) মহাতাব উদ্দিন এবং সাবেক সিনিয়র অফিসার (টিএমএসএস শাখায় কর্মরত) কায়দে আজম, মহাস্থান হাটের ইজারাদার আজমল হোসেন, জাহিদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন।
দুদক কর্মকর্তা রবীন্দ্রনাথ চাকী জানিয়েছেন, মহাস্থান হাটের ইজারাদার আজমল হোসেন, জাহিদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখার গ্রাহক। মহাস্থান হাট ইজারার জন্য তারা গত ২০১৭ সালের ৬ এবং ৯ এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নামে দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা মূল্যের সাতটি পে-অর্ডারের জন্য আবেদন করেন। কিন্তু তারা পে-অর্ডারের জন্য মাত্র নয় লাখ সাত হাজার ২৫ টাকা জমা দেন। এরপরও তাদের নামে দুই কোটি ৬৯ লাখ এক হাজার ৮০১ টাকা মূল্যের সাতটি পে-অর্ডার ইস্যু করা হয়।
১১ এপ্রিল শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ওই পে-অর্ডারের টাকাগুলো সরকারি নির্দিষ্ট হিসাবে জমা করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে পাঠানো হয়। তখন ওই ব্যাংক থেকে ক্লিয়ারেন্সের জন্য রূপালী ব্যাংক মহাস্থানগড় শাখায় পাঠানো হয়। কিন্তু ওই পরিমাণ অর্থ ব্যাংকে না থাকায় ওই শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক জোবায়নুর রহমান জাল এফডিআরের কাগজ তৈরি করেন এবং কয়েকজন গ্রাহকের নামে ভুয়া ঋণ উত্তোলন দেখিয়ে পে-অর্ডারের ওই অর্থ সমন্বয় করেন। এ কাজে তাকে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট নারী কর্মকর্তাসহ তিন জন সহযোগিতা করেন।
জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হলে রূপালী ব্যাংকের তৎকালীন উপ-মহাব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান গত ২০১৮ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি থানায় ব্যবস্থাপক জোবায়নুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। র‌্যাব সদস্যরা তাকে শরীয়তপুর থেকে পলাতক অবস্থায় গ্রেফতার করেন। দুদক গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি ব্যাংক কর্মকর্তা মহাতাব উদ্দিন ও কায়দে আজমকে গ্রেফতার করে। বর্তমানে ব্যবস্থাপক জোবায়নুর রহমান ও ইজারাদার আজমল হোসেন জামিনে রয়েছেন। এক ব্যাংকার ইশরাত জাহান ও দুই ইজারাদার জাহিদুর রহমান ও মোশাররফ হোসেন পলাতক রয়েছেন।