নাটোরে শিলা বৃষ্টিতে ১৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত

শিলাবৃষ্টি

 

ফাল্গুনের শুরুতে হঠাৎ শিলা বৃষ্টি হওয়ায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রবিবার ভোরে এ শিলাবৃষ্টি হয়। শিলা বৃষ্টির কারণে নাটোরের প্রায় ১৭ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম জানান, ভোর পাঁচটা থেকে শুরু হওয়া শিলাবৃষ্টিতে জেলার সিংড়া, সদর এবং নলডাঙ্গা উপজেলার কৃষকদের বেশি ক্ষতি হয়েছে।

তিনি জানান, মাঠ জরিপের ফলাফল অনুযায়ী প্রাথমিকভাবে ১৬৯৫৪ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া ক্ষতির মুখে পড়েছে ২৭৭৪ হেক্টর জমি। ক্ষতি হওয়া শস্যের মধ্যে রয়েছে ভুট্টা, গম, মসুর, খেসারি, রসুন, সরিষা ও পান ছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ফলের গাছ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করতে দু-তিন দিন সময় লাগবে বলে তিনি জানান।

সরেজমিনে নাটোর সদর, সিংড়া এবং নলডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সকাল দশটা পর্যন্ত শিলা দেখা গেছে। এসময় ফসলের ক্ষতি হওয়ায় অনেককেই কাঁদতে দেখা গেছে। অধিক ফলনের আশায় সময়ের আগেই অনেক কৃষক ঋণের টাকা নিয়ে চাষাবাদ করেছেন, কিন্তু শিলা বৃষ্টি তাদের সব আশা শেষ করে দিয়েছে বলে তারা জানান।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার ভাটোদাড়া এলাকার কৃষক সালাম জানান, তিনি প্রায় ১ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছিলেন। অধিক ফলনের আশায় নির্ধারিত সময়ের আগেই গমের বীজ বুনেছিলেন। শিলাবৃষ্টিতে পুরো ফসল নষ্ট হয়ে গেছে ।

সিংড়া উপজেলার দমদমা এলাকার কৃষক গোলাম জানান,‘তিনি প্রায় ১০ বিঘা জমিতে আম গাছ লাগিয়েছেন। প্রতিটি গাছেই অনেক মুকুল এসেছে। অকষ্মাৎ শিলাবৃষ্টিতে মুকুলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলার বাসুদেবপুর চকপাড়া গ্রামের কৃষক জরিপ জানান, তিনি এক বিঘা দুই কাঠা জমিতে গম চাষাবাদ করেছিলেন। এছাড়াও ১ বিঘা জমিতে রসুন এবং ১০ কাঠা জমিতে পটলের চাষ করেছিলেন। সব ফসল নষ্ট করে দিয়েছে শিলা বৃষ্টি। ফসলের কাজে এ পর্যন্ত তার প্রায় ৭০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে জরিপ বলেন, ‘শিলাবৃষ্টিতে আমার চকপাড়ার পুরো বিলের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। এই এলাকার সব কৃষকই ক্ষতি তালিকায় পড়েছেন।’