ধর্মবোন বানিয়ে শিশু অপহরণ, চারদিন পর উদ্ধার

অপহৃত শিশু বাবু
নাটোরে ধর্মবোন বানিয়ে এক নারীর শিশু ছেলেকে অপহরণের অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। একই সঙ্গে অপহৃত শিশু বাবু আহমেদকে উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রাণ গ্রামে। নাটোরের পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন শুক্রবার (১২ এপ্রিল) সকালে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহরণের চারদিন পর বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) রাতে শিশুটিকে উদ্ধার এবং একইসঙ্গে এ ঘটনায় জড়িত তিনজনকে আটক করা হয়।’
আটক ব্যক্তিরা হলো—সিরাজগঞ্জ জেলার কাজিপুর থানার রুহাবাড়ি গ্রামের ঈশান আহমেদ সোহাগ (২৩), গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ থানার লালচান্দ আদর্শ গ্রাম এলাকার নজরুল ইসলামের স্ত্রী নূরজাহান (৪৮) এবং একই জেলার পলাশবাড়ী থানার ছাতাপাড়া গ্রামের পাপলু ওরফে বাবু ওরফে সুমনের স্ত্রী নার্গিস আক্তার (২৫)। এরা অপহরণকারী দলের সদস্য বলে পুলিশ জানিয়েছে।

অপহৃত বাবু আহমেদ বড়াইগ্রাম উপজেলার আগ্রাণ গ্রামের দিনমজুর সেকেন্দার আলী ও সাহিদা বেগমের ছেলে। সে আগ্রাণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র।

পুলিশ সুপার জানান, প্রায় তিন-চার মাস আগে সেকেন্দার আলীর স্ত্রী সাহিদা বেগমের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয় সোহাগের। একপর্যায়ে সাহিদা বেগমকে ধর্মবোন বানায় সে। সোহাগ প্রায়ই সাহিদার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতো। ৫ এপ্রিল রাত তিনটার দিকে দুই বন্ধুসহ সাহিদার বাড়িতে বেড়াতে আসে সোহাগ। দুইদিন সেখানে থাকার পর সাহিদার ছেলে বাবুকে নিয়ে পাশের গ্রামে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে সোহাগ। সেকেন্দার আলী ও সাহিদা বেগম সরল বিশ্বাসে তাদের ছেলেকে সোহাগের সঙ্গে যেতে দেয়। বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় সোহাগ কৌশলে সেকেন্দারের মোবাইল ফোনটি চুরি করে নিয়ে যায়।

পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন জানান, যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর সোহাগ মোবাইলে সাহিদার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এ সময় ছেলেকে (বাবু) ফিরে পেতে তার কাছে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় বাবুকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সোহাগ। পরে সাহিদা ও তার স্বামী বিষয়টি পুলিশকে জানান।

পরে পুলিশের পরামর্শে সেকেন্দার বিকাশের মাধ্যমে সোহাগকে পাঁচ হাজার টাকা পাঠান। এদিকে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে টাকা উত্তোলনকারীর অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। নারায়ণগঞ্জ থেকে টাকা উত্তোলনের সময় পুলিশ সোহাগের স্ত্রী নার্গিস বেগমকে আটক করে।
অন্যদিকে, গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ এলাকা থেকে অপহরণচক্রের আরেক সদস্য শাজাহানের খালা নূরজাহানকে আটক করা হয়। পরে বৃহস্পতিবার (১১ এপিল) রাতে গাইবান্ধা জেলার সাদুল্লাপুর থেকে সোহাগকে আটক ও অপহৃত বাবুকে উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ জানান, বাবুকে অপহরণে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।