যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় শিক্ষককে বহিষ্কারাদেশ





ফজলুর রহমাননাটোরের সিংড়ায় শিক্ষার্থীদের যৌন হয়রানিসহ কয়েকটি অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে ফজলুর রহমান নামে খণ্ডকালীন এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ওই শিক্ষককে বহিষ্কারের আদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে ওই বহিষ্কারাদেশে স্বাক্ষর করা হয়। উপজেলার বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলে এ ঘটনা ঘটে। সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতো বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকে ফজলুর রহমান ওই স্কুলে গণিত বিভাগের খণ্ডকালীন শিক্ষকের দায়িত্ব পলন করে আসছেন। তার বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনসহ ১২টি অভিযোগ আনা হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের পক্ষ থেকে। ওই অভিযোগ প্রমাণের জন্য গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। প্রাথমিক তদন্তে তিনটি অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে কমিটি। অভিযোগের প্রমাণ পাওয়ায় এই শিক্ষককে বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। তবে আদেশের কপি এখনও হাতে পাননি ওই শিক্ষক।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান জানান, গত ১১ এপ্রিল বিদ্যালয়ের ১৩ জন শিক্ষার্থী এবং ১১ জন অভিভাবক ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানিসহ ১২টি অভিযোগ লিখিতভাবে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার মাহাতোকে জানান। বিষয়টির সত্যতা জানতে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা বিপুল কুমারকে প্রধান এবং উপজেলা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মমিন ও আইসিটি প্রোগ্রামার শফিকুল ইসলামকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। গত ১৭ এপ্রিল তদন্ত কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন পাওয়ার পর, অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় পরিচালনা পর্ষদের সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শিক্ষক ফজলুর রহমানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা ও তদন্ত কমিটির প্রধান বিপুল কুমার জানান, ১২টি অভিযোগের মধ্যে তিনটি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযোগের মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থীদের গায়ে হাত দেওয়া, তার কাছে প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করা ও ক্লাস টেস্ট নেওয়ার সময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করার সত্যতা পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত শিক্ষক জানান, তিনি লোকমুখে বিষয়টি জানতে পারলেও আদেশের কপি তিনি হাতে পাননি। অভিযোগের বিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সঠিক নয়। তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এ ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি সুশান্ত কুমার মাহাতো জানান, বৃহস্পতিবার রাতে বহিষ্কারাদেশের স্বাক্ষর করা হয়েছে। রোব-সোমবারের মধ্যে ওই শিক্ষক আদেশের কপি হাতে পাবে।