রাসিকের উচ্ছেদ অভিযানে মেয়রের চাচাতো ভাইকে জরিমানা

 

অভিযানে ভাঙা পড়ে আওয়ামী লীগের অবৈধ কার্যালয়অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে রাজশাহী নগরজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে সিটি করপোরেশন। দখলমুক্ত করা হচ্ছে ফুটপাতের দোকানপাট। রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) এই অভিযানে জরিমানা গুণেছেন খোদ মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই এএইচএম সাইদুজ্জামান নিপুন।

রাজশাহী নগরীর কাদিরগঞ্জ এলাকায় রাস্তার পাশে নির্মাণ সামগ্রী রেখেছিলেন তিনি। রাসিকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল এ অপরাধে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

সাইদুজ্জামান নিপুন জরিমানার টাকা পরিশোধ করেছেন। অবশ্য এ টাকা আদায়ে নিপুনের নির্মাণ কাজে নিয়োজিত দুই শ্রমিককে ধরে নিয়ে গিয়েছিল উচ্ছেদকারী দল। জরিমানার অর্থ পরিশোধের পর তারা ছাড়া পেয়েছেন। টাকা না দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাদের বিরুদ্ধে।

বিষয়টি স্বীকার করেছেন সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের চাচাতো ভাই এএইচএম সাইদুজ্জামান নিপুন। তিনি বলেন, নিজের একতলা বাড়ি নির্মাণের কাজ করছি। তাই কিছু ইট, খোয়া ও বালু রাস্তার ধারে ছিল। সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদ দল এসে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। তখন আমি বাড়িতে ছিলাম না। তাই টাকা দিতে না পারায় দুই শ্রমিককে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে জরিমানার টাকা দিয়ে আমি তাদের ছাড়িয়ে আনি।

শনিবারের এ উচ্ছেদ অভিযানে শহীদ কামারুজ্জামান স্টেডিয়ামের পশ্চিম পাশের মোড়ে এবং রেল ক্রসিং এলাকায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙা পড়েছে।

রাসিকের উচ্ছেদ অভিযানঅভিযানের বিষয়ে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল বলেন, ‘বিনা অনুমতিতে ও অবৈধভাবে ফুটপাত ও রাস্তার পাশ দখল, স্থাপনা তৈরির নির্মাণ সামগ্রী রাখার দায়ে স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন আইন- ২০০৯ এর ৯২ (৭) ধারা অনুযায়ী অনেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। জরিমানার টাকা পরিশোধ করায় অনেকে ছাড়া পেয়েছেন। সংখ্যাটা এখনো হিসেব করা হয়নি। কাজ চলছে। জনস্বার্থে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

প্রসঙ্গত, গত ১৫ এপ্রিল থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে রাসিক। অভিযানের ষষ্ঠ দিন শনিবার কাদিরগঞ্জ ছাড়াও নগরীর বন্ধগেট থেকে সিটিহাট এলাকা পর্যন্ত অভিযান চালানো হয়। এ অভিযান নিয়ে শনিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে নগরবাসীর সহায়তা চেয়েছেন মেয়র লিটন। পাশাপাশি নগর সংস্থার নির্দেশনা মানতে সবাইকে সতর্কও করেছেন তিনি।

ফেসবুক পোস্টে মেয়র লিখেছেন, ‘জনগণের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মহানগরীর সব রাস্তা এবং ফুটপাত সম্পূর্ণ দখলমুক্ত রাখার জন্য বছরব্যাপী উচ্ছেদ অভিযানের সিন্ধান্ত নিয়েছে রাসিক। তবে ফুটপাত ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে বিকাল ৪টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত অস্থায়ী দোকানে ব্যবসা করার অনুমতি থাকছে। সেক্ষেত্রে রাত ১০টার পর রাস্তায় বা ফুটপাতে কোনও স্থাপনা বা দোকান বন্ধ করে রাখা যাবে না। রাস্তায় বা ফুটপাতে সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়া নির্মাণ সামগ্রীও রাখা যাবে না। নির্দেশনা অমান্য করলে নেওয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।’