উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের হবিবুর রহমান হলের মাঠে অর্থনীতি বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফিরোজ আনামকে ছুরিকাঘাত করে দুর্বৃত্তরা। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি এখন হাসপাতালটির ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ওই ঘটনার পর শুক্রবার রাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি হলো—ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের নিষিদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ছুরিকাঘাতের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ডিবি পুলিশ কেন তুলে নিয়ে গিয়েছিল তার কারণ ব্যাখ্যা ও দুঃখ প্রকাশ করতে হবে।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া অর্থনীতি বিভাগের ২০১৩ সেশনের শিক্ষার্থী নিশাত আল হাসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা গতকাল থেকে পাঁচ দফা দাবিতে মহাসড়কে অবস্থান করছি। ২১ ও ২২ অক্টোবর ভর্তি পরীক্ষার জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়েছে। আগামী ২৪ অক্টোবরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ফের আন্দোলনে যাবো।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে একই দাবিতে মানববন্ধন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা বলেন, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে শিক্ষার্থীদের মেরে আহত করা ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। প্রায়ই ক্যাম্পাসে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু প্রশাসন এগুলো ঠেকাতে ব্যর্থ হচ্ছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে ঢুকে চুরি-ছিনতাই করছে, শিক্ষার্থীদের ধরে ধরে মারছে। শিক্ষার্থীরা তাদের কাছে জিম্মি। অবিলম্বে প্রশাসনকে ক্যাম্পাসের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নেয়।
এদিকে, একই দাবিতে বেলা ১২টার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার শিক্ষার্থীদের সংগঠন বদরগঞ্জ উপজেলা সমিতি।
ছুরিকাঘাতের ঘটনায় মামলা দায়ের, আটক দুই
ছুকিঘাতের ঘটনায় শুক্রবার রাতে বাদি হয়ে দণ্ডবিধি ৩৪, ৩২৫, ৩৪১ ও ৩৯৩ ধারায় মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী ফিরোজ আনাম। এতে অজ্ঞাত চার জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলাটি তদন্তের দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘রাতে মামলার দায়িত্ব পাওয়ার পর ইতোমধ্যে রুমেল ও রাকেশ নামে দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রামাণ পেলে মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হবে। তদন্তের স্বার্থে আটক ব্যক্তিদের বিস্তারিত পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না।’