ভাড়া নয়, পাখিরা পাবে স্থায়ী আবাস

খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানের পাখির বাসাপাখিদের জন্য ‘ভাড়া’ নয় বরং স্থায়ী ঠিকানা করে দিতে চায় কৃষি মন্ত্রণালয়। রাজশাহী জেলা প্রশাসন বাঘা উপজেলার খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের একটি আমবাগানকে পাখিদের থাকার ‘ভাড়া’ বাবদ বছরে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাছে। ৫ নভেম্বর পাঠানো ওই প্রস্তাবনার আলোকে মন্ত্রণালয় পাখিদের জন্য স্থায়ী আবাস তৈরি করতে ওই আমবাগানসহ সংশ্লিষ্ট জমিই অধিগ্রহণ করতে চায়। ১৩ নভেম্বর কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে রাজশাহী জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে পাখিদের জন্য ওই জমি অধিগ্রহণের পাল্টা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক হামিদুল হক বলেন,  মন্ত্রণালয় থেকে মৌখিকভাবে জানতে চেয়েছে, পাখির অভয়ারণ্য করতে সম্পূর্ণভাবে জমি অধিগ্রহণ করতে গেলে কী পরিমাণ টাকা লাগতে পারে, কতখানি জমি অধিগ্রহণ করতে হতে পারে এবং স্থায়ী অভয়ারণ্য করা গেলে পাখিদের অন্য কোথাও যাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। তথ্য সংগ্রহ করে মন্ত্রণালয়কে জানাতে বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসন কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, পাখির অভয়ারণ্য তৈরি করতে হলে মোটামুটি ১০-১২ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এটা হলে পাখিদের স্থায়ী আবাস তৈরি হবে।

খোর্দ্দ বাউসা গ্রামের আমবাগানের পাখির বাসাএর আগে ২০০৪ সাল থেকে রাজশাহীর পুঠিয়ার পচা মাড়িয়ায় শামুকখোল পাখি বাসা বাঁধে। বেশিরভাগ পাখি সেখানে শীতকালে এসে বাসা বাঁধে। প্রজননের সময় থাকে না। এ ব্যাপারে পুঠিয়া উপজেলার শিলমাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন মুকুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ২০০৪ সাল থেকে শামুকখোল পাখি শীতকালে এসে বাসা বাঁধে। এবারও পাখি এসেছে। আমরা সেই সময় পাখিগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে দেখাশুনা করি।’

এই প্রসঙ্গে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও পাখি বিশেষজ্ঞ আমিনুজ্জামান সালেহ্ রেজা বলেন,  ‘শামুকখোল পাখি সাধারণত একটি নির্দিষ্ট সময় পর চলে যায়। কারণ একটি স্থানে শামুকখোল পাখি ১০ বছরও থাকতে পারে, আবার দুই বছরও থাকতে পারে। খোর্দ্দ বাউসা গ্রামে পাখি শুধু প্রজননের জন্যই আসে। জুলাই-অক্টোবর পর্যন্ত থাকে। তারপর পাখিগুলো চলে যায়। এজন্য জমি অধিগ্রহণ করাটা কতটা কার্যকরী হবে তা বলা মুশকিল। আমবাগানে পাখিগুলো যেহেতু বাসা বাঁধে সেজন্য বাগান মালিকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়াটাই হয়তো ঠিক ছিল। কিছুদিন পর পাখিগুলো  চলেই যাবে। তখন বাচ্চাগুলোও উড়তে শিখে যাবে। ওই সময় গাছে থাকা পাখির বাসা ভেঙে দিলেও খুব একটা ক্ষতি হবে না।’

আরও পড়ুন:

 

পাখির বাসা ভাঙা যাবে না: হাইকোর্ট

‘সবার গাছে বাসা বাঁধে না পাখি, আমরা ভাগ্যবান’

পাখির বাসা বাঁচাতে বরাদ্দ চাইলেন জেলা প্রশাসক