আমনের ফলন কম, দাম পাচ্ছেন না কৃষক

আমন ধান

এখন চলছে ধান কাটা ও মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম। নওগাঁর রাণীনগর উপজেলায় নানা রোগ-বালাইয়ে একদিকে যেমন ধানের ফলন কমে গেছে, অন্যদিকে ন্যায্য দর না পাওয়ায় লোকসানের কবলে পড়েছেন কৃষকরা। গত ইরি-বোরো মৌসুমে লোকসানের পর আমন আবাদেও লোকসান গুনতে হচ্ছে এখানকার কৃষকদের।

বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাটে ধান ৫৮০ টাকা থেকে ৭১০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে।

করজগ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া বলেন, ‘প্রতি বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে ধানের আবাদ করতে রোপণ থেকে কাটা-মাড়াই পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে ১০ হাজার থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। পক্ষান্তরে ব্লাস্ট ও খোলপচা রোগের কারণে প্রতি বিঘায় ১০ থেকে ১৬ মণ পর্যন্ত ধানের ফলন হচ্ছে। ফলন এবং দাম কম হওয়ায় এবার প্রতি বিঘা জমিতে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে।

একডালা গ্রামের কৃষক সুলতান বলেন, ‘বিভিন্ন রোগ-বালাইয়ের কারণে ধানের ফলন কমে গেছে। তার ওপর ধানের ন্যায্য দাম না পাওয়ায় বিঘাপ্রতি ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লোকসান হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে ধানের আবাদ করা মুশকিল হয়ে যাবে।’

রাণীনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আশা করছি লক্ষ্যমাত্রা যা নির্ধারণ করা হয়েছে তার কাছাকাছি ফলন পাওয়া যাবে। তবে ব্লাস্ট ও খোলপচা রোগের আক্রমণে শীষ মরে যাওয়ায় ধানের ফলন কিছুটা কম হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি আমন মৌসুমে রাণীনগর উপজেলাজুড়ে ১৮ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল ১৭ হাজার ৮৮০ হেক্টর এবং স্থানীয় জাত রয়েছে ২৪৫ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮১ হাজার ৫৬২ মেট্রিক টন।

রাণীনগর উপজেলা সরকারি ধান-চাল ক্রয় কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আল মামুন বলেন, ‘এরইমধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে লটারির মাধ্যমে কৃষকদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যে এসব ধান সংগ্রহ শুরু হলে স্থানীয় বাজারে এর প্রভাব পড়বে এবং ধানের দামও বৃদ্ধি পাবে।’