এদিকে মুক্ত দিবসে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ইউনিট ও সদর উপজেলা কমিটির মেয়াদ না থাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে কোনও অনুষ্ঠান করেনি মুক্তিযোদ্ধারা। এমনকি সরকারিভাবেও নেওয়া হয়নি কোনও কর্মসূচি। তবে বেলা সাড়ে ১১টায় মুক্ত দিবসে আনন্দ র্যালি ও সংক্ষিপ্ত পথসভা করেছে ছাত্রলীগ।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বাংলা ট্রিবিউন কে জানান, ‘যুদ্ধের শুরুর দিকে মার্চ মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জে তেমন প্রভাব পড়েনি। ১৯ এপ্রিল রাতে শহর দখল করে বোমা বিষ্ফোরণ করে পাক বাহিনী। এরপরই পাকবাহিনীকে প্রতিহত করতে সংগঠিত হতে থাকে মুক্তিযোদ্ধারা। ৭ নভেম্বর লে. রফিকের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা মকরমপুর ও আলী নগর পাক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়ে ৫ পাক সেনা নিহত হয়। অন্যরা মহানন্দা নদী পাড় হয়ে পালিয়ে যায়।’
অপর দিকে ১০ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা চর বাগডাঙ্গা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের দিকে অগ্রসর হয়। পাক সেনাদের বাংকার দখল করে নেয়। শহর দখলের সেই যুদ্ধে অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান। তিনি জানান, ১৩ ডিসেম্বর যুদ্ধের তীব্রতা বেড়ে যায়। এসময় হরিপুর ব্রিজের কাছে যুদ্ধে শহীদ হন ইপিআর নায়েক নবির উদ্দীনসহ ছয়জন মুক্তিযোদ্ধা। এতে ৯ জন গ্রামবাসীও নিহত হয়। ১৪ ডিসেম্বর সকালে সম্মুখযুদ্ধে পাক বাহিনীর গুলিতে নিহত হন বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দীন জাহাঙ্গীর। এই খবর পেয়ে ৭নং সেক্টরের ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দীন, লে. রফিকুল ইসলাম, লে. আব্দুল কাইউম খান স্ব-স্ব বাহিনী নিয়ে ১৪ ডিসেম্বর বিকালে আবারও হামলা শুরু করে। গভীর রাতে শেষ হয় সেই যুদ্ধ। পরের দিন ১৫ ডিসেম্বর সকালে শত্রুমুক্ত হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহর।
তবে স্বাধীনতার ৪৮ বছর পরও; হতাশার কথা জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধারা। মুক্তিযোদ্ধা তরিকুল ইসলাম জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী ছাড়া প্রশাসন, রাজনৈতিক দল ও নেতাদের কার্যক্রম নিয়ে আমরা হতাশ। ৪৮ বছরেও প্রত্যাশার দেশ পাইনি।’