প্রতিবন্ধীদের আউটসোর্সিং

Natore3আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে স্বাবলম্বী হচ্ছেন প্রতিবন্ধীরা। তাদেরকে প্রশিক্ষিত করছে ‘উই এ্যাবল’। ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে নিজের অর্থায়নে এটি শুরু করেন নাটোর শহরের কানাইখালী মহল্লার বাসিন্দা মৌমিতা ঘোষ।

মৌমিতা ঘোষ জানান, ‘উই এ্যাবল’ প্রতিষ্ঠানে ৩০ জন বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশু এবং ৩৫ জন সাঁওতাল তরুণ-তরুণীকে বেসিক কম্পিউটার কোর্সে ভর্তি করা হয়। প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম ও মানসিক সাপোর্ট দেন নাটোর আইটি ইনস্টিটিউটের ব্যববস্থাপনা পরিচালক জুয়েল রানা। নাটোরের বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী স্কুলের শিক্ষকদের সহযোগিতা চাইলে তারাও এগিয়ে আসেন। বর্তমানে ওই ৬৫ জন শিশুর মধ্যে ২০ জন ডাটা অ্যান্ট্রি অপারেটর হিসেবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করছে। ১৫ জন শিশু গ্রাফিক্স ডিজাউন কোর্স করছে। আর বাকি শিশুরা প্রোগ্রামিং করছে।

শহরের পিটিআই মোড় এলাকার খায়রুল ইসলাম ও রিক্তা বেগম জানান, তার ছেলে গত ৬ মাস থেকে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ডাটা এন্ট্রির কাজ করছে। ছেলের কাজে তারা খুশি। শহরের হাফরাস্তা এলাকার শারীরিক প্রতিবন্ধী শিহাবও প্রায় ৬ মাস থেকে গ্রাফিক্স ও ডাটা এন্ট্রির কাজ করছে।

Natore7মৌমিতা ঘোষ জানান, ২০১৭ সালে এলআইসিটি সংগঠনের মাধ্যমে তিনি গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্স সম্পন্ন করেন। এরপর একই বছর লেখাপড়ার পাশাপাশি নাটোর আইটি ইন্সটিটিউট নামের আইটি কোম্পানিতে গ্রাফিক্স ডিজাইন কোর্সের প্রশিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন। পাশাপাশি নাটোর সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ল্যাব কোর্ডিনেটর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১ বছরের মধ্যেই তিনি নাটোর আইটি ইনস্টিটিটিউটের পরিচালক (এডমিন) ও শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের সহকারী জেলা সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পান। এর পাশাপাশি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের আইটি বিষয়ে টিউশনি শুরু করেন। তিনি আইটি শিক্ষা পদ্ধতি নাটোরের গন্ডি পেরিয়ে সারা দেশের পাশাপাশি ছড়িয়ে দিতে চান পুরো বিশ্বে। এজন্য প্রশিক্ষণ বিষয়ক অ্যাপস তৈরির চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। যেখানে বিশ্বের যেকোনও প্রান্তের শিশুরা লাইভ ক্লাস করার সুযোগ পাবে। আবার এই অ্যাপসের মধ্যে বিভিন্ন ভিডিও অ্যানিমেশনসহ প্রয়োজনীয় তথ্য থাকবে। যার মাধ্যমে শিশুরা ঘরে বসেই প্রশিক্ষণ নিয়ে স্বাবলম্বী হতে পারবে।

Natore8নাটোর আইটি ইনস্টিটিউটের ব্যববস্থাপনা পরিচালক জুয়েল জানান, বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী শিশুদের পাশাপাশি সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তথা সাঁওতাল তরুণ-তরুণীদের আইটি প্রশিক্ষণ দিতে গিয়ে মৌমিতা মানসিক ও শারীরিকভাবে সীমাহীন পরিশ্রম করছে। তিনি তাকে কম্পিউটারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়তা করছেন। মৌমিতার ভালো কাজের সহায়তা করতে পেরে তিনি আনন্দিত। মৌমিতার স্বপ্ন পূরণে তার সহায়তা সবসময়ই থাকবে।